।। আব্দুল মালেক ।।
উলিপুরে হত-দরিদ্র নারীদের প্রশিক্ষণের নামে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উলিপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা থেকে তাদের আটক করেন। গত বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকালে আটককৃতদের কুড়িগ্রাম জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, করতোয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রকল্প নামের একটি ভূয়া প্রতিষ্ঠান উপজেলার সাড়ে ৭ হাজার মহিলাকে সেলাই প্রশিক্ষণসহ আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ ও দারিদ্র দূরিকরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করেন। প্রতারক চক্রটি চলতি বছরের মে মাসে উপজেলার দূর্গাপুর বাজারের পার্শ্বে জনৈক আলহাজ্ব সৈয়দ আলীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে অফিসের কার্যক্রম শুরু করে। এরপর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতারনার ফাঁদ পেতে দর্জি প্রশিক্ষণ ও হস্তশিল্প আই.এইচ.আর.জে.এস সহযোগিতা ও রেজি নং ১০২৭২-২০০৯ ব্যবহার করে প্রশিক্ষক নিয়োগ দেন। পরে নিয়োগকৃত বেতনভোগি এসব প্রশিক্ষকের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় ২‘শ ৫০টি গ্রুপে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার উপকারভোগির তালিকা তৈরি করেন। এসব মহিলাদের কাছে থেকে প্রাথমিক সদস্য ভর্তি ফিসহ প্রতিজনের কাছে ৩৩০ টাকা করে প্রায় ২৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। পরে পর্যায়ক্রমে এসব উপকারীভোগিদের কাছে প্রশিক্ষণ ও সেলাইমেশিনসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেয়ার কথা বলে এক থেকে দেড় হাজার টাকা করে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে প্রায় কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নেয়। প্রতারিত মহিলাদের পক্ষে বিজলী বেগমের দায়েরকৃত মামলার প্রেক্ষিতে উলিপুর থানার শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার আল ইমরানুল আলম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর(তদন্ত) আনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গত মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শোভাগঞ্জ ও শান্তিরাম গ্রাম থেকে তাদের আটক করেন। আটককৃতরা হলেন, গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শান্তিরাম মাষ্টারপাড়া গ্রামের গোবিন্দ নাথ সরকারের পূত্র রুবেল কুমার সরকার (৩২) ও একই উপজেলার মরুয়াদহ গ্রামের মৃত জাফর আলীর পূত্র খোরশেদ আলম(৪১) ও তার সহোদর ভাই মোকছেদুল ইসলাম (৩২)। এসময় আটককৃতদের কাছ থেকে নগদ ১লাখ টাকা, সেলাইমেশিন, ১৩ টি মোবাইল, দুইটি ট্যাব, একাধিক সিমকার্ড ও বিকাশের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।