।। আব্দুল মালেক ।।
উলিপুরে হতদরিদ্র পরিবারের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। থানায় অভিযোগ দাখিলের ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ মামলা গ্রহন করেনি। অভিযোগ উঠেছে, যৌন নিপীড়নের মতো স্পর্শকাতর ঘটনা ধামাচাপা দিতে পুলিশ রহস্যজনক নিরবতা পালন করছে। এ ঘটনায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে থানায় লিখিত অভিযোগ করায় ভুক্তভোগী ঐ পরিবারটি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
অভিযোগ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার দুপুরে উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের কানিপাড়া গ্রামের আজাদ মিয়ার স্ত্রী নাজমা বেগম পার্শ্ববর্তী সাবেক ইউপি সদস্য বজলুর রশিদের পুকুরে গোসল করতে যায়। এ সময় একই গ্রামের মৃত হায়দার আলীর পুত্র হাসেন আলী (৫৫) ঐ বাড়ির পার্শ্বে তার বাঁশ ঝাড়ে অবস্থান করছিল। এ সুযোগে লম্পট হাসেন আলী ফাঁকা বাড়ি পেয়ে ঘরে ঢুকে শিশু শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। এসময় কৌশলে শিশুটি পালিয়ে গিয়ে তার মাকে বিষয়টি জানালে সেখানে উপস্থিত সাবেক ইউপি সদস্য বজলুর রশিদ ও প্রতিবেশি চায়না বেগম বিষয়টি অবগত হন। ঘটনাটি দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে অবস্থা বেগতিক দেখে লম্পট হাসেন আলী ভুল বুঝতে পেরে ঐ শিক্ষার্থীর মা নাজমা বেগমকে ঘটনাটি প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী পরিবারটি হাসেন আলীর চাচাদের কাছে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচার চান। তারা কোন প্রতিকার না করায় গত রবিবার দুপুরে শিশুটির মা উলিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
লম্পট হাসেন আলীর চাচাতো ভাই রাকু মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ওই সময় আমি শিশুটির বাড়ির পার্শ্বে বাঁশ ঝাড়ের বাঁশ কাটতে গিয়ে হঠাৎ চিৎকার শোনার পর দেখি হাসেন আলী দৌড়ে পালাচ্ছেন। অভিযোগের পেক্ষিতে এস.আই হাসান ফারুক ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটি, তার পরিবার ও প্রতিবেশিদের কাছ থেকে ঘটনার সত্যতা পান। কিন্তু রহস্যজনক কারণে এ ঘটনায় তাৎক্ষনিক কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
লম্পট হাসেন আলীর বিরুদ্ধে এর আগেও এমন অভিযোগ উঠলেও প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি।
শিশুটির বাবা আজাদ মিয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, আমি মিস্ত্রি কাজের সুবাদে রংপুরে থাকি। আমি বাহিরে যাওয়ার সময় হাসেন আলীসহ প্রতিবেশিদের উপর ভরসা রেখে যাই। কিন্তু সেই হাসেন আলী এমন ঘটনা ঘটালো যা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। তিনি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই হাসান ফারুকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ করেছে তবে এজাহার করেনি। এ কারণে মামলা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোয়াজ্জেম হোসেন অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এস আই হাসান ফারুককে তদন্ত করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।