।। আব্দুল মালেক ।।
উলিপুরে চলতি মৌসুমে আমন ধান খেতের চারাগাছ কেটে সাবাড় করছে ইঁদুর। সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখলেও তা ক্রমেই ফিকে হতে যাচ্ছে। ইঁদুর নিধনের জন্য জমিতে ফাঁদ কিংবা খুটির মাথায় পলিথিন টাঙ্গিয়ে দিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি রোপা আমন মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ২৩ হাজার ৭’শ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড, উফসী ও স্থানীয় জাতের ধান চাষেবাদের প্রায় ৬৪ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে হাইব্রিড জাতের ৭’শ ৫০ হেক্টর জমিতে ২ হাজার ৭’শ ৭৯ মেট্রিক টন ধান, উফসী জাতের ১৮ হাজার ৬’শ ৮০ হেক্টর জমিতে ৫২ হজার ৬’শ ৭৮ মেট্রিক টন ধান ও স্থানীয় জাতের ৪ হাজার ২’শ ৪৮ হেক্টর জমিতে ৭ হাজার ৫’শ ৬১ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
গতকাল শনিবার (৫ অক্টোবর) পৌর এলাকার পশ্চিম শিববাড়ী, রাজারাম ক্ষেত্রী, পূর্ব নাওডাঙ্গা, নারিকেল বাড়ী সন্ন্যাসী তলা, বকুল তলা, পান্ডুল ইউনিয়নের সিদ্ধান্ত মালতিবাড়ি, মিনা বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আমন ধান ক্ষেতে ব্যাপকভাবে ইঁদুর আক্রমণ করেছে। অনেকের জমির বেশির ভাগ চারাগাছ কেটে সাবাড় করে দিয়েছে। জমির মাঝখানে ধান গাছ কেটে স্তুপ করে রেখেছে।
পান্ডুল ইউনিয়নের সিদ্ধাত মালতিবাড়ি গ্রামের কালিপদ বর্মণ (৫০) বলেন, “আইতত টিন ডাঙ্গেয়া, ফটকা ফুটিয়েও কোন কাম হবার নাগছে না। ৪০ শতক জমির ধান বোধায় মোর ছুঁচের প্যাটত যায়”। ওই গ্রামের নিধির চন্দ্র(৫৫) বলেন, ৬০ শতক জমির বেশিরভাগ চারা গাছ ছুঁচো(ইঁদুর) কেটে সাবাড় করেছে। একজনকে ৩০০ টাকা দিয়ে ৬ টি ইঁদুর মারছি, ওই লোক আরো ৫শত টাকা চেয়েছে, তাই বাধ্য হয়ে বাঁশ দিয়ে নিজেই ফাঁদ তৈরি করছি। উলিপুর পৌরসভার নারিকেল বাড়ি এলাকার মাঈদুল ইসলাম বলেন, জমিতে বাঁশের খুটির মাথায় পলিথিন ও ছেঁড়া কাপড় দিয়ে কাকতাড়ুয়া বানিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না। বিশাল আকৃতির এ ইঁদুরকে কোন কিছু দিয়েও কাজ হচ্ছে না। একই কথা জানালেন রাজারাম ক্ষেত্রী গ্রামের শুভাশীষ চন্দ্র বর্মন নন্দ। একই অবস্থা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, সম্মিলিত ভাবে কৃষকদের ইঁদুর নিধন কিংবা জিংক ফসফাইড নামক কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।