তানজিম হাসান সাকিব। সদ্য যুব এশিয়া কাপে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব উনিশ দলের এই তরুণ অলরাউন্ডার দলের বিপর্যয়ে হাল ধরেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তীরে গিয়ে তরী ডুবলেও জয় করে নিয়েছেন হাজারো ভক্তের মন।
শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত যুব এশিয়া কাপে দেশের হয়ে অসাধারণ খেলা এই অলরাউন্ডারের সাক্ষাতকার নিয়েছেন আতিক মেসবাহ্ লগ্ন। জেনেছেন শ্বাসরুদ্ধকর সেই মুহূর্তের অজানা সব গল্প।
★ আবারও ভারতের কাছে খুব দুঃখজনক হার! প্রতিক্রিয়াটা কেমন?
সাকিবঃ সবার যেমন খারাপ লাগে, তার থেকে বেশি খারাপ লাগে আমাদেরই। জয়ের খুব কাছে ছিলাম। প্রথম ইনিংসের পর ভাবতে পারিনি এমনটা হবে।
★ ভারত বলেই কি এভাবে হেরে যাওয়া?
সাকিবঃ আসলে তেমনটা না। হতে পারে ভাগ্য সহায় ছিলো না। আমরা শতভাগ আত্মবিশ্বাস নিয়েই ব্যাট করতে নেমেছিলাম।
★ দেশের হয়ে খেলতে নামা, অনুভূতিটা কেমন?
সাকিবঃ আসলে দেশের হয়ে খেলতে নামলে এমনিতেই যে প্রেষণা কাজ করে, লীগে তেমনটা কাজ করে না। দেশের হয়ে খেলা সত্যি অনেক বেশি ভালো লাগার।
★ ম্যাচে ভারতকে কতো রানে সামলানোর টার্গেট ছিল?
সাকিবঃ গেম প্লান শুধু এটা ছিল যে আমরা ভালো জায়গায় বল করব। তাতে যতো তাড়াতাড়ি আটকানো যায়। আমরা সেভাবে বলও করেছিলাম, সফলও হয়েছিলাম।
★ ব্যাটিং এ কোচের নির্দেশনা কেমন ছিলো?
সাকিবঃ স্যার(রিচার্ড স্টোনার) আমাদেরকে ন্যাচারাল রোলটা প্লে করতে বলেছিলেন। রান কম বলে খুব ডিফেন্স বা তাড়াহুড়া একটাও করতে বলেনি। কিন্তু প্রথমে চারটা উইকেট(১৬ রানে) পড়ে যাওয়ার পর আমরা ব্যাকফুটে চলে যাই। আর তামিম ভাইয়ের উইকেট নিয়ে আমাদের সন্দেহ আছে।
★ শুধু কি তামিম,আপনার নিজেরটা?
সাকিবঃ আমারটা তো ব্যাটে লেগেছিলো। জয় থেকে মাত্র ছয় রান দূরে ছিলাম। আমরা ব্যাটে লাগার শব্দও ছিলো। কিন্তু আম্পায়ার এলবিডব্লিউ আউট দিয়ে দেয়। ওটাই ছিলো ভারতের টার্নিং পয়েন্ট।
★ আশির নিচেই আট ব্যাটসম্যান সাজঘরে, কিন্তু আপনাকে বেশ সাবলীল লাগছিল। রহস্য কি?
সাকিবঃ (হাসি) আসলে রান খুব কম লাগতো। আর আমি খুব সাবধানী শট খেলছিলাম। আমার টার্গেট ছিলো আমি কোনো রিস্কি শট খেলব না। ফ্লোরিং শট খেলার মাধ্যমে যতো কাছাকাছি নিয়ে আসা যায় ম্যাচটাকে। রাকিব ভাইকে (রাকিবুল হাসান) বলেছিলাম “তুমি উইকেটে থাকো, আমরা রিস্ক নিবো না”। কিন্তু শেষমেশ হয়ে উঠল না।
★ বৃষ্টি কি কোনো প্রভাব ফেলেছিলো?
সাকিবঃ আসলে তেমন প্রভাব ফেলেনি। তবে আমরা যে ফ্লো-তে ক্রিকেট খেলি, বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হলে তো মনোযোগ এ ঘাটতি হয়েই যায় এইটুকুই।
★ খেলা লাইভ সম্প্রচার ছিলো। টিভি বা অনলাইনে আপনাকে মানুষ দেখছে, নার্ভাস ছিলেন?
সাকিবঃ আমি ভুলেই গিয়েছিলাম, খেলা লাইভ সম্প্রচার হচ্ছে। আমি স্বাভাবিকভাবেই খেলে গেছি। আমার মাথায় ছিল ম্যাচ জিতাতে হবে। আমার মনে হচ্ছিলো ওরা আমাকে আউট করিতে পারবে না।
★ আউট হওয়ার সময় শাহীন আলমকে কোন পরামর্শ দিয়েছিলেন?
সাকিবঃ হ্যা, আমি ওকে বলেছিলাম তিনটা বল ডিফেন্স করে রাকিব ভাইকে স্ট্রাইক দিতে।
★ পিচ থেকে কি আলাদা কোন সুবিধা পাচ্ছিলো বোলাররা?
সাকিবঃহ্যা।কিছুটা বাউন্সি পিচের মতই ছিলো। আবার কোথাও পড়লে হালকা স্লো হচ্ছিলো। যাই হোক ভাগ্য আমাদের পক্ষে ছিলো না। কোচের কাছেও সান্ত্বনা পেয়েছি।
★ সব মিলিয়ে ম্যাচটাকে কিভাবে দেখবেন?
সাকিবঃ ভুল থেকেই মানুষ শেখে। ম্যাচ শেষে কোচের কাছেও সান্ত্বনা পেয়েছি।
★ সামনে সাফল্য পাবেন ইনশাআল্লাহ। একটা ভিন্ন প্রশ্ন করি। আলাদীন এর দৈত্যর কাছে তিনটি চাওয়া?
সাকিবঃ যানজটমুক্ত বাংলাদেশ, আকাশে উড়তে চাই, আর সুন্দর একটা দেশ।
★ সেকি! ক্রিকেট নিয়ে কিছু চাইলেন না?
সাকিবঃ (হাসি) আসলে ক্রিকেট নিয়ে কিছু চাইবো না। হার্ডওয়ার্ক দিয়েই সব অর্জন করতে চাই।
★ ক্রিকেটে আইডল কে?
সাকিবঃ দেশে হলে মুশফিকুর রহিম ভাই। আর দেশের বাইরে ডেইল স্টেইন।
★ কতোদুর যাবার স্বপ্ন দেখেন?
সাকিবঃ জাতীয় দলে খেলতে চাই। ও বিশ্বকাপ জিততে চাই বাংলাদেশের হয়ে।
★ সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
সাকিবঃ আপনাকে এবং উলিপুর ডট কমকেও ধন্যবাদ।