।। আব্দুল মালেক ।।
অর্থ সংকট আর উপকরণ তৈরি কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মালাকর পরিবারগুলোর দুর্দিন চলছে। জীবন-জীবিকার তাগিদে মালাকর পরিবারগুলোর লোকজন আর্থিক সংকটের পাশাপাশি উপকরণের অভাবে পৈত্রিক পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশার দিকে ঝুকে পড়ছেন। বর্তমানে এসব পরিবার গুলোর দিন কাটছে নিদারুণ কষ্টে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উলিপুর হাটে গিয়ে দেখা যায় পসরা সাজিয়ে বসে আসেন ৪ জন মালাকার। বসে বসে শোলা দিয়ে তৈরি করছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের বিয়েসহ পূজা অর্চনার জিনিসপত্র।
এ সময় নারায়ণ চন্দ্র মালাকরের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘পারিবারিক পেশা, ছাড়তেও পারিনা, অন্য কামও পাই না। এগল্যা বিক্রি করি আর সংসার চলে না’। পাশেই বসা সুবন চন্দ্র মালাকর, নিত্যজিৎ চন্দ্র মালাকর ও ইন্দ্রজিৎ মালাকর বলেন, এক সময় পরিত্যক্ত নিচু জমিতে শোলা চাষ হতো। কিন্তু বর্তমানে প্রতি পোণ (৮০ টি) শোলা ৫’শ থেকে ৬ শত টাকায় কিনতে হচ্ছে। যা দিয়ে এসব উপকরণ তৈরি করে মজুরী খরচও উঠছে না।
উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু মালাকর পরিবার থাকলেও এখন হাতেগোনা কয়েকটি পরিবার এ কাজের সাথে জড়িত বলেও জানান তারা। বর্তমানে এসব পরিবার গুলোর দিন কাটছে নিদারুণ কষ্টে। আর্থিক সংকটের পাশাপাশি উপকরণের অভাবে অনেকেই আজ এ পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন। জীবন-জীবিকার তাগিদে মালাকর পরিবারগুলোর লোকজন অন্য পেশায় ঝুঁকে পড়ছেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের বিয়েসহ বিভিন্ন পূজা অর্চনা করতে শোলা’র তৈরি উপকরণ তৈরি কাজ করে থাকেন মালাকর সম্প্রাদায়ের লোকজন। এক সময় এ সম্প্রদায়ের লোকজনের কদর ছিল। তারা বিয়ের মুকুট, দূর্গার অলংকার, মণসা ঠাকুরসহ বিভিন্ন পূজার সরঞ্জামাদি ও ধর্মীয় উপকরণ তৈরি করে নিজেকে গর্বিত মনে করতেন। সংসারও চলতো ভালো ভাবে। এ সম্প্রদায়ের লোকজনকে ঘিরে গড়ে উঠেছে মালাকর পাড়া। কাঁচামালের অভাব ও আর্থিক সংকটে পড়ে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। হাতে-গোনা কয়েকটি পরিবার এ কাজ করলেও তাদেরও জীবন কাটছে নিদারুণ কষ্টে। উপজেলা বেশ কয়েকটি এলাকায় এ সম্প্রদায়ের লোকজনের বসতি থাকলেও অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন।