।। নিউজ ডেস্ক ।।
চলতি বছরেরই কুড়িগ্রাম-ঢাকা মধ্যে সরাসরি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল চালু হতে পারে। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে এ ট্রেন সার্ভিস চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের লালমনিরহাট ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার মোহাম্মদ শফিকুর রহমান।
এ বিষয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চান কুড়িগ্রাম এগিয়ে যাক। এজন্য রেলমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কুড়িগ্রাম-ঢাকার মধ্যে সরাসরি একটি আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস চালুর প্রক্রিয়া শুরু করেছি। কবে থেকে ট্রেনটি চলাচল শুরু করবে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। আশা করছি চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে এ ট্রেন সার্ভিস চালু করা সম্ভব হবে।’
তিনি বলেন, ‘জেনারেল ম্যানেজার আমাকে বলেছেন অক্টোবর থেকে হয়তো কুড়িগ্রাম থেকে ট্রেন চালানো হতে পারে। তুমি প্রস্তুতি নাও, লাইনের অবস্থা দেখে আমাকে জানাও। আমরা জানিয়েছি লাইনের অবস্থা খারাপ, মেরামতের জন্য ১০ কোটি টাকার প্রাক্কলন পাঠিয়েছি। এটার অনুমোদন হলে তিস্তা থেকে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার লাইনের মেরামত কাজ করা হবে। তারপর আন্তঃনগর ট্রেন চালানোর মতো স্ট্যান্ডার্ড লাইন হবে। ’
বর্তমানে কুড়িগ্রাম থেকে একটি সংযোগ ট্রেনে (শাটল ট্রেন) করে যাত্রীদের কাউনিয়ায় আনা হয়। সেখান থেকে রংপুর এক্সপ্রেস তাদের ঢাকা নিয়ে আসে। তবে কুড়িগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি, চিলমারী-কুড়িগ্রাম-ঢাকা সরাসরি আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস চালুর। সম্প্রতি রেলমন্ত্রী এ ট্রেন চালুর ঘোষণা দিলেও এখনও তা চালু হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে লালমনিরহাট ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার বলেন, ‘আগে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত ট্রেনটি চলাচলের সুযোগ করে দেন। তিস্তা-কুড়িগ্রাম রেলপথের ২০ কিলোমিটার সংস্কারে শুধু স্লিপার, ব্যালাস্ট কুশন (পাথর) ও রেললাইন সংযুক্ত করতে ১০ কোটি টাকার প্রাক্কলন করা হয়েছে। সেখানে চিলমারী পর্যন্ত ট্রেন চাইলে আরও অতিরিক্ত ৩০ কিলোমিটার রেললাইন মেরামত করতে হবে। ওই রেলপথের (কুড়িগ্রাম-চিলমারী) অবস্থা আরও বেশি খারাপ।’
জেলাবাসীকে আশ্বস্ত করে রেলের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আপনারা যে কোনোভাবে কুড়িগ্রামে একটি ইন্টারসিটি ঢোকার সুযোগ দিন। এরপর দেখবেন আস্তে আস্তে বাকিটাও হয়ে যাবে।’
কুড়িগ্রাম রেলস্টেশন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে কুড়িগ্রামে একটিমাত্র ট্রেন চলাচল করছে। এই একটি ট্রেন ভিন্ন নামে দু’বার কুড়িগ্রামে যাতায়াত করছে। দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে সকালে একটি ট্রেন কুড়িগ্রাম হয়ে চিলমারীর রমনা স্টেশনে গিয়ে আবার তিস্তায় ফিরে যায়। এই ট্রেনটিই আবার তিস্তা থেকে রমনা স্টেশনে যায় এবং ডাউন নাম নিয়ে পার্বতীপুর ফিরে যায়। কিন্তু তিস্তা থেকে চিলমারীর রমনা স্টেশন পর্যন্ত রেলপথের বেহাল দশার কারণে এই পথে বেশ ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। আর সময়মতো ট্রেন যাতায়াত না করায় নানা ভোগান্তি আর বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। রেললাইনের স্লিপার, পাথর এবং কোনও কোনও স্থানে মাটি ও গাইড ওয়াল সরে যাওয়ায় নির্ধারিত গতির চেয়ে অনেক কম গতিতে ট্রেন চলাচল করছে। ফলে কুড়িগ্রাম থেকে চিলমারীর রমনা স্টেশন পর্যন্ত মাত্র ৩৩ কিলোমিটার পথ যেতেই সময় লাগছে প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা।
সূত্রঃ banglatribune