।। নিউজ ডেস্ক ।।
কুড়িগ্রাম-ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের নাগরিকদের চূড়ান্ত তালিকা (এনআরসি) বাদ পড়াদের সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কুড়িগ্রাম সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সীমান্তে বিজিবির সদস্য সংখ্যা ও টহল বাড়ানো হয়েছে। কুড়িগ্রামের বিজিবি ২২, বিজিবি ৩৫ ও বিজিবি ১৫ ব্যাটালিয়নের পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।
কুড়িগ্রামের সদর, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও রৌমারী উপজেলার সঙ্গে ভারতের আসাম রাজ্যের সীমান্ত রয়েছে। এছাড়াও জেলার ফুলবাড়ী, উলিপুর ও রাজীবপুর উপজেলার সঙ্গেও ভারতের সীমান্ত রয়েছে। জেলার সদর, ভুরুঙ্গামারী ও নাগেশ্বরী উপজেলার সীমান্তের দায়িত্বে থাকা কুড়িগ্রাম বিজিবি ২২ ব্যাটালিয়নের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘এনআরসি নিয়ে আমরা আগে থেকেই সতর্ক রয়েছি। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর সম্ভাব্য সব পরিস্থিতি মোকাবিলায় সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে।
এছাড়াও বর্ডার আউট পোস্টের (বিওপি) দায়িত্বশীলদের সীমান্তবাসীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে তথ্য চাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও জানান,‘কুড়িগ্রাম বিজিবি ২২ ব্যাটালিয়নের অধীন ভারতের আসাম সীমান্তবর্তী ৯টি বিওপি ক্যাম্পকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিওপিগুলোতে পর্যাপ্ত জনবল রয়েছে। আমরা আশা করছি কোনও সমস্যা হবে না।’ এদিকে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সঙ্গে ভারতের আসাম রাজ্যের ধুবরি ও দক্ষিণ শালমারা মাইনকারচর জেলার প্রায় ৩২ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এই সীমান্ত এলাকায় বিজিবির ৯টি বিওপি রয়েছে যা জামালপুর বিজিবি ৩৫ ব্যাটালিয়নের আওতাভুক্ত।
এই সীমান্ত এলাকার প্রায় পুরোটাই কাঁটাতার ঘেরা থাকলেও পুশ-ইন এড়াতে বাড়তি নিরাপত্তার জন্য এই সীমান্ত এলাকাতেও সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি টহল জোরদার করেছে বিজিবি। রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙা গয়াটাপাড়া ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা বিজিবি ৩৫ ব্যাটালিয়নের হাবিলদার কমল কৃষ্ণ সরকার বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের টহল দলের সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলার দায়িত্বে থাকা জামালপুর বিজিবি ৩৫ ব্যাটালিয়নের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আসাম পরিস্থিতিতে আমরা সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করেছি।
সীমান্তে বিজিবির অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েনের পাশাপাশি টহল জোরদার করা হয়েছে।’ কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা এবং নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার কিয়দংশের দায়িত্বে থাকা লালমনিরহাট বিজিবি ১৫ ব্যাটালিয়নের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আনোয়ার-উল আলম বলেন, ‘আমাদের ব্যাটালিয়নের অধীন সীমান্তে আমরা সর্বাবস্থায় সতর্ক রয়েছি। অবৈধ অনুপ্রবেশ, পুশ-ইন কিংবা চোরাকারবারিদের তৎপরতা ঠেকাতে আমরা বিওপিগুলোতে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি।
প্রসঙ্গত, ভারতের আসামে চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন রাজ্যের প্রায় ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন মানুষ।
শনিবার (৩১ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় অনলাইনে ও এনআরসি সেবাকেন্দ্রে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়। এক বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চূড়ান্ত তালিকায় মোট আবেদনকারী তিন কোটি ৩০ লাখ ১৭ হাজার ৬৬১ জনের মধ্যে নাগরিক হিসেবে স্থান পেয়েছেন তিন কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জন। বাদ পড়া নাগরিকদের অনেককে বাংলাদেশে পুশ-ইন করা হতে পারে এমন আশঙ্কায় সীমান্ত এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।