।। আব্দুল মালেক ।।
উলিপুরে সরকারি ও বেসরকারি ক্রয় কেন্দ্র না থাকায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পাট চাষিরা। ফলে এসব প্রান্তিক পাট চাষিরা ধানের মূল্যের মতো পাটের ন্যায্যমূল্য থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। পাটক্রয় কেন্দ্র না থাকায় এক শ্রেণির ফড়িয়া ও পাট ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে পাট কিনে মজুদ করছে। এ অঞ্চলের কৃষকরা সাম্প্রতিক বন্যার ধকল কাটাতে অর্থের অভাবে কমমূল্যে পাট বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ৯’শ ৪৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ২ হাজার ৬’শ ৭৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষাবাদ করা হয়। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৩’শ ৭৫ মন পাট। এদিকে উপজেলায় পাট ক্রয়কেন্দ্র না থাকায় সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে পাট বিক্রি করতে পারছেন না চাষিরা। চাষিদের আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় প্রতি মণ পাট ব্যবসায়ীদের কাছে ১৪০০-১৫০০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভর মুখ দেখছে, আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পাট চাষিরা। চাষিদের দাবি সরকারিভাবে উপজেলায় পাট ক্রয় কেন্দ্র খোলা হলে তারা লাভবান হবেন।
উপজেলার নারিকেল বাড়ি গ্রামের পাট চাষি হাফিজার রহমান জানান, তিনি চলতি বছরে ২ একর জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় পরিপক্ক না হলেও পাট কেটে জাগ দিতে হয়েছে। পাট কাটা থেকে শুরু করে শুকানো পর্যন্ত মন প্রতি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৩শত টাকা খরচ হয়েছে। সরকারিভাবে উপজলায় পাট ক্রয় কেন্দ্র খোলা হলে চাষিরা লাভবান হতেন। একই কথা জানালেন ওই গ্রামের কৃষ্ণ চন্দ্র, কালিপদ, মোজাম্মেলসহ অনেক কৃষক। পাট ব্যবসায়ী জোবেদ আলী, রুহুল আমিন, একরামুল হক ,সামছুলসহ অনেকে জানান, পাটের গুণগত মানের উপর ১ হাজার ২ ’শ থেকে ১ হাজার ৮’শ টাকায় প্রতি মন পাট কেনাবেচা হচ্ছে। তবে অনেক কৃষক পাটখড়ি বিক্রি করে লাভবান হওয়ার আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তারপরও চাষিরা সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দেয়ায় পাটের রং কিছুটা নষ্ট হয়ে যায়। তবে সরকারি ভাবে ক্রয় কেন্দ্র খোলা হলে চাষিরা ন্যায্যমূল্য পেতেন।