।। আব্দুল মালেক ।।
সারি সারি বেডে ভেসে বেড়াচ্ছে লালশাক, পাটশাক, লাউ, ঢেঁড়স, বরবটি, গিমা কলমির ভেলা। ব্রহ্মপুত্র নদের দুধকুমার কোলায় ভেসে আছে সবুজের সবজি খেত। ব্রহ্মপুত্র নদের পরিত্যক্ত এ স্থানে সবজি চাষ করতে পেরে কৃষকরাও খুশি। কীটনাশক ছাড়াই চাষাবাদ করা হচ্ছে এসব ভাসমান সবজি। উপজেলায় হাতিয়া ইউনিয়নের নতুন অনন্তপুর ব্লকের কামারপাড়া গ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদের দুধকুমার কোলায় ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
সরেজমিনে, গতকাল বুধবার সকালে গিয়ে কথা হয় কৃষক নুর আমিনের সাথে। তিনি বলেন, পরিত্যক্ত এ জায়গায় কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ভাসমান বেডে সবজি চাষ করছি। ইতোমধ্যে সবজি গুলো ডালপালা মেলে ছড়িয়ে পড়ছে। আশা করছি সবজি বিক্রি করে আর্থিক লাভবান হবো। ওই এলাকার আজিম আলী, মোছাঃ রজিনা বেগম, রফিকুল ইসলাম, আব্দুল মমিন, আনিসুর রহমানসহ ৬ জন কৃষক প্রত্যেকে ৪টি করে ২৪টি ভাসমান বেডে সবজি চাষ করছেন। এসব কৃষক জানান, কচুরীপানাসহ জলজ আগাছা স্তুপীকৃত করে বেড তৈরি করে সবজি চাষ করা হচ্ছে। কোন প্রকার রাসায়নিক সার ছাড়াই সম্পূর্ণ জৈবিক উপায়ে উৎপাদিত এ সকল সবজি খেতেও খুব সুস্বাদু। আগামীতে ভাসমান বেডে সবজি চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন এসব কৃষক। আর সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছেন ওই ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সায়িদুর রহমান। এছাড়াও উপজেলার দড়িকিশোর পুর, শুকদেব, তবকপুরসহ দূর্গাপুর ব্লকের ভাসমান বেডে লতা জাতীয় ও লতাবিহীন সবজি চাষ ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ প্রকল্পের আওতায় কৃষি বিভাগের নিবিড় তত্ত্বাবধানে নদীতে ভাসমান বেডে সবজি চাষ করা হচ্ছে। এছাড়াও সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ধান চারাবীজ সরবরাহের জন্য ভাসমান বেডে আপদকালীন রোপাআমন বীজতলা তৈরি করা হয়েছে।