।। আব্দুল মালেক ।।
উলিপুরে এক শিক্ষক ছেলেধরা গুজব রটিয়ে হতভাগ্য এক কাঠুরিয়াকে গণপিটুনির মুখে ঠেলে দিয়েছে। গুরুতর অসুস্থ গণপিটুনির শিকার আলাউদ্দিন এখন হাসপাতালে। দিনমজুর কাঠুরিয়কে মারপিটের ঘটনায় উত্তেজিত জনতা শিক্ষককে আটক করে পুলিশে দেয়। বর্তমানে গণপিটুনির শিকার আলাউদ্দিন কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল মমিনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ শুক্রবার শিক্ষক মমিনকে প্রধান আসামী করে মামলা দায়েরের পর তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চৌমহনী বাজার সংলগ্ন পল্লী উন্নয়ন রেসিডেন্সিয়াল স্কুলে। এ ঘটনায় এলাকায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা, উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের হাতিয়া ভবেশের উচাভিটা গ্রামের ফুক্তুল আলীর পুত্র কাঠুরিয়া আলাউদ্দিন (৫৬) প্রতিদিনের ন্যায় গাছ কাটার কাজ করে ওই স্কুল সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। স্কুলের সামনে আসলে ওই স্কুলের ২য় শ্রেনীর ছাত্র সিনহা (৭) আলাউদ্দিন কে পাগল বলে চিল্লাতে থাকলে তিনি সিনহাকে ধাওয়া করেন। এ সময় ওই স্কুলের শিক্ষক আব্দুল মমিন মিয়া ছেলে ধরার গুজব রটিয়ে কাঠুরিয়া আলাউদ্দিন কে মারধর শুরু করেন। এলকাবাসী তাতে যোগ দেয়। এক পর্যায়ে আব্দুল মতিন নামের এক ব্যক্তি রাস্তা থেকে জোর করে কাঠুরিয়াকে স্কুলের ভিতর নিয়ে শিক্ষক মমিনসহ বেধড়ক মারধর শুরু করেন। শিক্ষক মমিন ও মতিন আপন ভাই এবং ওই গ্রামের মাওঃ আব্দুস সালামের পুত্র। এক পর্যায়ে কাঠুরিয়া গুরুত্বর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে স্কুলের বারান্দায় শুয়ে রাখেন তারা। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা ওই স্কুলের গেটে তালা লাগিয়ে আব্দুল মমিনকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কাঠুরিয়া আলাউদ্দিনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করে এবং শিক্ষক আব্দুল মমিনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে আলাউদ্দিনের অবস্থার অবনতি হলে রাতেই কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে শুক্রবার বিকেলে গুজব রটানোর দায়ে আব্দুল মমিন ও আব্দুল মতিনকে প্রধান আসামী করে অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে মামলা দায়েরের পর শিক্ষক মমিনকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। থানার অফিসার ইনচার্জ মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।