।। আব্দুল মালেক ।।
উলিপুরে এবারের বন্যায় কৃষিতে রোপা আমন বীজতলাসহ প্রায় ১৮ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকায় উপজেলার ৪০ হাজার ৫’শ ২০ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে থাকায় ৫’শ ৯৫ হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হয়েছে। সেই সাথে ৩’শ ৮৪ হেক্টর জমির আউশ ধান, ৬৫ হেক্টর জমির পাটক্ষেতসহ ২’শ ৬৭ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি রোপা আমন মৌসুমে ২৩ হাজার ৭’শ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়। ১ হাজার ১‘শ ৮৫ হেক্টর বীজতলার প্রয়োজন হলেও কৃষক পর্যায়ে ১ হাজার ৫‘শ ৭৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন বীজতলা তৈরি করা হয়। বন্যার পানিতে দীর্ঘসময় ডুবে থাকায় প্রায় ৭‘শ ৪৫ হেক্টর জমির বীজতলা সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে যায়। রোপা আমন মৌসুমে বীজ সংকট মোকাবেলার জন্য ১৩টি ইউনিয়নে ১ একর করে ১৩ একর জমিতে আপদকালীন কমিউনিটি বীজতলা তৈরি উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি বিভাগ। ইতোমধ্যে উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নে ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। বীজ সংকট এড়াতে কৃষি বিভাগ ২৪ মেঃ টন ধানবীজ সংগ্রহ করেছে। এদিকে এবারের বন্যায় এখন পর্যন্ত কৃষিতে ১৭ কোটি ৯ লাখ ৩৫ হাজার ৫’শ টাকার বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বজরা ইউনিয়নের পূর্ব কালপানি বজরা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, অনেক বীজতলার চারাগাছ দীর্ঘসময় পানির নীচে থাকায় পচে গেছে। কথা হয় ওই গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল, মিন্টু, ছাদেক আলী, মেহের আলী, সাহেব আলী, হামিদুল ইসলামসহ অনেকের সাথে কথা হলে তারা বলেন, বন্যার পানিতে ডুবে বীজতলা চারাগাছ নষ্ট হয়ে পচে গেছে। কিভাবে যে চারা সংগ্রহ করবো সেটা নিয়ে চিন্তায় আছেন। এমনিতে এবারে বন্যায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। নতুন করে বীজতলা করার মতো টাকা পয়সাও নাই। তাছাড়া বাজারে ধানের দামও কম। এভাবে ধান চাষ করে লোকসান হবে। তার চেয়ে জমি পতিত রাখবো কিনা সেটাই ভাবছি। ধামশ্রেনী ইউনিয়নের কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, ৩ একর জমিতে আমন রোপনের জন্য বীজতলা তৈরি করছি। কিন্তু বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকা বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। একই পরিস্থিতি উপজেলার হাতিয়া, সাহেবের আলগা, বেগমগঞ্জ, বুড়াবুড়িসহ বন্যা কবলিত ইউনিয়ন গুলো ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করা হয়েছে। এসব কৃষককে চারা বীজ সহ বিভিন্ন সহযোগিতা করা হবে।