।। নিউজ ডেস্ক ।।
কুড়িগ্রাম সমিতি, ঢাকা’র উদ্যোগে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলার বন্যার্তদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। সমিতির এ কার্যক্রম সমগ্র জেলার দুর্গত অঞ্চলগুলোতে বিভিন্ন দল ও উপদলের মাধ্যমে সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। গত শনিবার (২৭ জুলাই) দলিত এবং পিছিয়ে পড়া নৃগোষ্ঠীর সংগঠনের রবিদাস সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্থ ২৫ পরিবার, রাজারহাটের চর বিদ্যানন্দের ৭০ পরিবার ও শহরের আশেপাশের এলাকার অত্যন্ত গরীব ৩০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। পরে নৌকা দিয়ে যাত্রাপুরের চর ভগপতিপুরে ১৫০ পরিবার, কচাকাটা থানার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ডুমুরদহ চরে ২২০ পরিবার, আটাশির চরে ৫০ পরিবার, যাত্রাপুর সদর চর পার্বতীপুরে ৫০ পরিবার, চর আরাজি কদম তলা ১০০ পরিবার ও যাত্রাপুর হাটের সন্নিকটে ৪০ পরিবারের মাঝে বন্যা সহায়তা বিতরণ করা হয়। এছাড়াও গত শুক্রবার (২৬ জুলাই) বেশিরভাগই উলিপুরের এবং চিলমারীর একটিসহ ৭টি চরের প্রায় ৭০০ পরিবারের মাঝে বন্যা সহায়তা দেয়া হয়। ২৬ এবং ২৭ তারিখ দু’দিনে কুড়িগ্রাম সমিতি, ঢাকা’র পক্ষ থেকে প্রায় ১৪৫০ পরিবারের মাঝে বন্যা সহায়তা বিতরণ করা হয়।
সমিতির পক্ষ থেকে দুর্গত অঞ্চলের অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন সাইদুল আবেদীন ডলার (মহাসচিব), মিজান তালুকদার (যুগ্ম-মহাসচিব), মোমেনা সরকার (মহিলা বিষয়ক সম্পাদক), চৌধুরী তানভীর ইসলাম (সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক), শোয়াইবুর রহমান সোহাগ (সদস্য) এবং স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ২০ জন স্বেচ্ছাসেবী।
বন্যার্ত পরিবারগুলোর মাঝে চাল ৩ কেজি, ডাল ৫০০ গ্রাম, আলু ১ কেজি, লবণ ৫০০ গ্রাম, সরিষার তেল ১০০ গ্রাম, চিড়া ১ কেজি, চিনি ৫০০ গ্রাম, বিস্কুট ১ প্যাকেট, ছোট দুধের প্যাকেট ১টি, স্যালাইন ২ প্যাকেট, পানি ১ লিটার ও সাবান বিতরণ করা হয়।
কুড়িগ্রাম সমিতি, ঢাকা’র মহাসচিব মোঃ সাইদুল আবেদীন ডলার বলেন, ‘জেলার ৭০.৮% মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে বাস করে। এছাড়া কুড়িগ্রাম জেলার মোট ভুখন্ডের প্রায় ২২% নদী ও চর। ব্রহ্মপুত্র নদ দীর্ঘসময় ধরে পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে নদীর তলদেশ উচু হয়ে যায়, যা খনন করা খুবই জরুরী। তথ্যমতে, ৪২০টি চরের সংস্কার না করায় এবং নদী ভাঙন রোধ নেই বলে প্রায় প্রতিবছর এই জেলায় বন্যা দেখা দেয়। এবার পাহাড়ি ঢলের কারণে আগাম বন্যায় গত একশ’ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। পানিবন্দি হয়েছে জেলার প্রায় ৯ লক্ষ মানুষ। বিশেষ করে যাদের ঘরবাড়ী, ফসল বা গবাদি পশুর ক্ষতি হয়েছে তাদের পুনর্বাসন করা অত্যন্ত জরুরী।’ তিনি এ ব্যাপারে দেশের সরকার ও সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য তিনি সরকারের কাছে কুড়িগ্রাম জেলার ১৬টি নদীর খনন ও ৪২০টি চরের সংস্কারের দাবী জানান।