।। আব্দুল মালেক ।।
উলিপুরে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও দুর্ভোগ বাড়ছে বানভাসি মানুষের। অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে। অনেকের হাত পায়ে ঘা হয়েছে। বন্যা দুর্গত এলাকার শিশু ও বৃদ্ধরা সর্দি জ্বরসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। বিশুদ্ধ পানির অভাবে বন্যাকবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, চর্মরোগ ও ভাইরাসজনিত জ্বর। হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে আক্রান্ত রোগির ভীড় ক্রমেই বাড়ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গতকাল রবিবার (২১ জুলাই) বহিঃবিভাগে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ৩’শ ২০ জন রোগিকে চিকিৎসা নিয়েছে।
এদিকে ঘরবাড়ি ও শাকসবজিসহ মৌসুুমি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি ঠিক করতে না পারায় নিজ বাড়িতে ফিরেও বাড়িঘর বসবাসের উপযোগি হয়নি। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজন তাদের গবাদি পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। পশু খাদ্য যোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে। সরকারি ভাবে অপ্রতুল ত্রাণ বিতরণ করায় বানবাসি মানুষের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অনেক এলাকায় এখন পর্যন্ত ত্রাণ পৌঁছায়নি বলে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে।
উপজেলার ধামশ্রেনী ইউনিয়নের নাওড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, অনেক শিশুসহ মহিলা ও পুরুষের হাত পায়ে ফাংগাল ইনফেকশন হয়েছে। কথা হয় ওই গ্রামের আকিলা বেগম (৬৫) সাথে, তিনি বলেন, ‘কি দেখপের আসছেন বাহে,পানিত থাকতে থাকতে হামার হাত-পাওত ঘাও হইছে, হাটা-চলাও করবের পাই নে, এ্যাদোনত আন্দাবাড়িও করবের পাও না’।একই গ্রামের রাশেদা বেগম (৪৫), রোশনা বেগম (৪৮), আব্দুল হাকিম (৬৫), ধলাচন্দ (৫০), সাধু রাম (৫২), সুফিয়া খাতুন (৫৫)সহ অনেকের সাথে কথা হলে তারা বলেন, ‘গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বাড়িতে পানি। সারাক্ষণ ঘরে বাহিরে কাঁদা পানিতে হাটাচলা করতে গিয়ে এমন হয়েছে। আক্রান্ত স্থান গুলো জ্বালাপোড়া করে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডাঃ সুভাষ চন্দ্র সরকার বলেন, উপজেলার বন্যা দুর্গত এলাকায় ১৪ টি মেডিকেল টীমের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৮০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ১৫ হাজার খাবার স্যালাইন বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২ লাখ ৫০ হাজার বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ১৩৫ মেঃ টন চাল ও ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।