।। আব্দুল মালেক ।।
উলিপুরে এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের ঘটনায় ওই কিশোরী প্রায় ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় একাধিক বার সালিশ বৈঠক হলেও সমাধান না হওয়ায় কিশোরীর পিতা বাদী হয়ে মঙ্গলবার থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ ধর্ষকের পিতা ও বড় ভাইকে আটক করেন। ঘটনাটি ঘটেছে, তবকপুর ইউনিয়নের সাদুল্যা চাচিয়ারপাড় গ্রামে।
কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সাদুল্যা চাচিয়ারপাড় গ্রামের দিনমজুর মহিজল হকের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরী কন্যা (১৪) কে প্রতিবেশি মোনাল মিয়া ওরফে মনার ছেলে হযরত আলী (২১) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময় তাকে ধর্ষণ করে আসছিল। ফলে ওই কিশোরী প্রায় ৭ মাসের অন্তঃসত্তা হয়ে পরে। এ ঘটনা জানাজানি হলে বিষয়টি আপোষ মিমাংসার জন্য গ্রামে একাধিক সালিশ বৈঠক বসে। সেখানে সমাধান না হওয়ায় ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ হোসেন মুকুল বিষয়টি দুই পরিবারকে নিয়ে মিটিং এ বসলে হযরত আলী ওই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে। এ সময় ধর্ষকের পরিবার থেকে বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করার জন্য কিশোরীকে বিয়ের পরিবর্তে ১লাখ ৪০ হাজার টাকা দেয়ার প্রস্তাব দেন। ধর্ষক হযরত আলী কোন ভাবেই ওই অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে বিয়ে করতে রাজী না হওয়ায় চেয়ারম্যানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি। পরে ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) থানায় মামলা করেন।
ওই কিশোরীর পিতা মহিজল হক বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ তাই পেটের ভাত জোগাড়ের জন্য আমি ইট ভাটায় কাজ করি ও আমার স্ত্রী অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। দিনের বেলা আমরা দুজনই বাড়িতে না থাকার সুযোগে এলাকার প্রভাবশালী মোনাল মিয়ার ছেলে হযরত আলী বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে আমার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কন্যাকে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করে আসছিল। পরে আমরা বিষয়টি জানতে পেরে আমার কন্যাকে উলিপুর শহরের ডিজিটাল ল্যাব এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে পরীক্ষা করে জানতে পারি সে প্রায় ৭ মাসের গর্ভবতী। এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছে বিচার চেয়ে না পেয়ে ধর্ষক এবং তার পিতা ও বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে বাধ্য হয়েছি।
তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ হোসেন মুকুল বলেন, ‘বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় একাধিকবার সালিশ বৈঠক করেছি। ছেলের পরিবার থেকে টাকা দিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করার প্রস্তাব দেয়া হয়। কিন্তু কিশোরীর গর্ভের সন্তানকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করায় মিমাংসা করা যায়নি। তাই কিশোরীর পিতাকে আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।’
থানার অফিসার ইনচার্জ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘ধর্ষনের মামলায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। মূল আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ভিকটিমের মেডিকেল পরীক্ষার পর বিস্তারিত জানা যাবে।