|| আব্দুল মালেক ||
উলিপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে। ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর পানি অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিদিনই বাড়ছে বানভাসী মানুষের সংখ্যা। গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের ব্যাপারী গ্রামে বন্যার পানি ডুবে হাবিবুল্ল্যাহ নামে ৬ বছরের এক শিশু মারা গেছে। এছাড়াও উলিপুর উপজেলা লাগোয়া গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের কাশিমবাজার লখিয়ার পাড়ার তিস্তা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে উপজেলার বজরা ইউনিয়নের চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তারা ঘরবাড়ি ফেলে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছেন। ওইসব এলাকায় ত্রিপল ও গো-খাদ্যের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে।
নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় লোকজন উঁচু জায়গা, বাঁধ বা রাস্তায় আশ্রয় নিচ্ছে। বন্যার পানিতে ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট এবং শৌচাগার ডুবে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে জলমগ্ন মানুষ। বিঘ্নিত হচ্ছে পরিবেশ। জলমগ্ন হয়ে পড়ায় উপজেলার প্রায় ৪৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। ৭টি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের নাগড়াকুরা গ্রামে একটি টি-বাঁধের ৩০০ মিটার অংশ তিস্তা নদীর তীব্র পানির স্রোতে ধ্বসে গেছে। ফলে মুল বাঁধটি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ধরলা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে ১১২ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপূত্রের পানি ১০৮ সে.মিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিস্তার পানি কমতে শুরু করেছে। কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আমন বীজতলা ২৬০ হেক্টর, আউস ২৮০ হেক্ট, সবজি ১৪০ হেক্টর,পাট ৪৬০ হেক্টরসহ কলা ও ভুট্রা ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকার ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরা।