।। আব্দুল মালেক ।।
উলিপুর পৌরসভার অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী ও পথচারীদের প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনার পড়তে হচ্ছে। উলিপুর-নাজিমখাঁন সড়কে মাতৃমঙ্গল সংলগ্ন স্থানে সড়কের উপর হাটু পানি জমে থাকলেও তা অপসারণের কোন উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। ৫০ গজ রাস্তা পারাপার করতে ১০ টাকা খরচ করে পার হতে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। ওই পথে প্রতিদিন শতশত ছাত্র-ছাত্রী কষ্ট করে পারাপার হলেও পৌর কর্তৃপক্ষ নিরব ভুমিকা পালন করছে।
কলেজ পড়ুয়া ছাত্র অনিক বলেন, প্রতিদিন পানি পার হতে জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। রাস্তা পারাপারে অসুবিধার কারণে উলিপুর কিন্ডার গার্টেন স্কুল গত সোমবার থেকে বন্ধ রয়েছে। ৫ম শ্রেণির ছাত্র আরিফুল ইসলামের মা লাইজু খাতুন বলেন, ছেলেকে তো একা ছাড়তে পারছি না। রিক্সা করে প্রতিদিন স্কুলে নিয়ে আসতে হয়। অফিসের সামনে পানিবন্দি ডেলটা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীর উলিপুর ইউনিট ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম বিটু বলেন, দীর্ঘদিন থেকে একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তার উপর পানি জমে থাকায় মানুষজন দুর্ভোগের শিকার হন। কিন্তু এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোন নজর নেই।
গত বছর সড়কটি প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে মেরামত কাজ শেষ করে এলজিইডি। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগকে হস্তান্তর করেন। গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাতের ফলে পানি জমে থাকলেও কোন বিভাগই সমাধানের উদ্যোগ নেয়নি। এছাড়াও উলিপুর বাজারের মাছবাজার, উপজেলা চত্বর, কাঁচাবাজার, পাট হাটি, পৌর ভূমি অফিসের সামন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরসহ শহরের সর্বত্রই পানি জমে জনজীবন নাকাল হয়ে পড়েছে।
মাছ বাজারে আসা রবিউল ইসলাম জানান, মাছ কিনতে আসলে বাড়িতে গিয়ে গোসল করতে হয়। কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী আব্বাছ বলেন, প্রতিদিন পানি জমে থাকার কারণে মানুষ কেনাকাটা করতে আসতে পারেনা। অভিযোগ রয়েছে, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে উলিপুর পৌরসভা অপরিকল্পিতভাবে ড্রেন নির্মাণ করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী নুরল ইসলাম বলেন, ওই সড়কটি নির্মাণের ডিজাইনে ড্রেন থাকলেও ঠিকাদার নির্মাণ না করায় বিল দেয়া হয়নি। উলিপুর পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত সচিব প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, পূর্বের কর্তৃপক্ষ সঠিকভাবে ড্রেন নির্মাণ না করায় বর্তমানে সমস্যা তৈরি হয়েছে। অপরিকল্পিত ড্রেনের উপর লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে কেন ফুটপাত নির্মাণ করা হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মানুষ তো হাটতে পারছে। উলিপুর পৌরসভার মেয়র তারিক আবুল আলা বলেন, রাস্তার উপর জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোঃ আব্দুল কাদের বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলা হয়েছে।