।। নিউজ ডেস্ক ।।
কুড়িগ্রামে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পুলিশ কনস্টেবল পদে ৩৩ জনের চাকরি দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। তবে একেবারে বিনা পয়সায় ঠিক নয়, মাত্র ১০৩ টাকায়।
অর্থ আর মামা-খালুর দাপট না থাকলে পুলিশে চাকরি পাওয়া যায় না! এমন একটা কথা প্রচলিত ছিল এ জেলায়। সেই কলুষিত সিন্ডিকেটের ভিত্তিতে আঘাত করেন নবাগত কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার (বিপিএম) মোহাম্মদ মুহিবুল ইসলাম খান।
কুড়িগ্রাম জেলার আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নের পৃষ্ঠপোষক পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান যোগদান করে জেলার প্রতিটি উপজেলায় মাইকিং এবং লিফলেট বিতরণ করে জনগণকে ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার করেন। কেউ যেন পুলিশে চাকুরির দেয়ার নামে অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নিতে না পারেন।
নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মুহিবুল ইসলাম খানের ব্যতিক্রমী প্রচারণায় আশায় বুক বেঁধেছে দেশের প্রধানতম দারিদ্র্যপীড়িত নদীবেষ্টিত ও সীমান্ত ঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামের পিছিয়ে পড়া মানুষ।
সারাদেশের ন্যায় কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কুড়িগ্রাম থেকে নেয়া হলো ৩৩ জনকে। এতে মুক্তিযোদ্ধাসহ সব কোটা পূরণ করা হয়েছে। যাচাই বাছাই শেষ করে ৪ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে চূড়ান্ত ঘোষণা দেয়া হয়। কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার (বিপিএম) মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান তার কার্যালয়ের সামনে এই চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা দেন।
কুড়িগ্রাম পুলিশ সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে ১৫৭৫ জন চাকরিপ্রত্যাশী অংশ নিলেও লিখিত পরীক্ষা দিয়েছেন মাত্র ৬২৫ জন। এতে উত্তীর্ণ হয় ১০৬জন। এর মধ্য থেকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হয় ৩৩ জনের নাম। স্থান পায় ৫ নারীও। পাঁচ নারীর মধ্যে অন্যের হতদরিদ্র মায়ের সন্তান সানজিদা।
ছোট বেলা থেকেই পুলিশে চাকরি করার স্বপ্ন দেখতেন সানজিদা। কিন্তু অভাবের সংসারে চাকরি নেয়ার সামর্থ্য নেই তার। সানজিদার বাবা একজন প্রান্তিক কৃষক। সে কুড়িগ্রাম পুলিশের সচেতনতামূলক প্রচারণা আশায় বুক বাঁধে।
নিয়ম অনুযায়ী যাচাই বাছাই শেষে চূড়ান্ত পর্যায়ে যখন কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মুহিবুল ইসলাম খান তার হাতে ফুল দিয়ে চাকুরির বিষয় নিশ্চিত করেন, তখন সে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন এবং পুলিশ সুপারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
এ ব্যাপারে কথা হলে মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান জানান, চাকরি পাওয়া ছেলে-মেয়েদের অভিব্যক্তি শুনে আমি আনন্দিত হয়েছি। যারা চাকরি পেয়েছেন, তাদের অধিকাংশই হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। প্রকৃত মেধাবি সুযোগ পেয়েছেন চাকরিতে।
তিনি আরও বলেন, কুড়িগ্রামে চাকুরির দেয়ার নামে অর্থ কেলেঙ্কারির দায়ে পুলিশের ৩ সদস্যকে ইতোমধ্যে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সরকারসহ পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিরা চাচ্ছেন পুলিশে স্বচ্ছতা ফিরে আসুক। সেই চাওয়া পূরণেই কুড়িগ্রাম পুলিশ নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এ ধারা আগামীতেও অব্যাহত রাখতে আমার সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে।
সূত্রঃ jugantor