।। আব্দুল মালেক ।।
উলিপুরের হতদরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থী সৌরভ চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে ঢাকা নটরডেম কলেজে ভর্তি হলেও আর্থিক সংকটের কারণে শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বাবা গ্রামীণ একটি বাজারে নর-সুন্দরের কাজ করে কোন রকমে সংসার চালালেও আজ যেন ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। কোন ভাবেই মেলাতে পারছেন না, কিভাবে ছেলের লেখাপড়ার খরচ যোগাবেন। ভাবছেন ঢাকায় কোন সেলুনে কাজ করে ছেলের লেখাপড়া ও পরিবারের খরচ যোগাবেন। সে তো শুধু স্বপ্ন।
বৃহস্পতিবার সকালে জেলার উলিপুর পৌরসভার বকুলতলা বাজারের সেলুনে গিয়ে কথা হয় বাবা ধনিরাম চন্দ্র শর্মার সাথে। তিনি জানান, ছেলে সৌরভ চলতি এসএসসি পরীক্ষায় উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল এন্ড কলেজ থেকে অংশ নিয়ে ৯৪৭ নম্বরসহ জিপিএ-৫ পেয়েছে। স্থানীয় কলেজে ভর্তি করাতে চাইলেও সৌরভ ঢাকার নটরডেম কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিযোগিতা করে ভর্তির সুযোগ পায়। কিন্তু মেধাবী সৌরভের ইচ্ছার কাছে বাবার আর্থিক সংকট হার মানে। ধার-দেনা করে ভর্তি করার পর দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। কিভাবে চলবে ছেলের পড়ালেখা? নাকি আর্থিক সংকটের কারণে একটি উজ্জল ভবিষ্যৎ থমকে যাবে। এমন প্রশ্নই সব সময় তার মনের ভেতর ঘুরপাক খাচ্ছে।
দুই সন্তানের মধ্যে সৌরভ কুমার শর্মা পিএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিল। জেএসসি পরীক্ষাও জিপিএ-৫ পাওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করে। ছোট ছেলে সৌম্য কুমার শর্মার বয়স সাড়ে ৪ বছর। মা শ্যামলী রানী শর্মা একজন গৃহিনী। উলিপুর পৌসভার নারিকেল বাড়ী আগপাড়া গ্রামের ধনিরাম চন্দ্র শর্মা পারিবারিক পেশা হিসেবে উলিপুর-নাজিমখাঁন সড়কের বকুলতলা বাজারে ছোট বেলা থেকেই সেলুন দিয়ে নর-সুন্দরের কাজ শুরু করেন। বসতভিটাসহ ৫০ শতক আবাদি জমিই তার সম্বল। মেধাবী সৌরভকে নিয়ে তাদের যত স্বপ্ন। কিন্তু আর্থিক দৈন্যতা তাদের স্বপ্ন পূরণের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সৌরভ ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে সাধারণ মানুষের সেবা করতে চায়। আমরা কী পারি না অদম্য মেধাবী সৌরভের পাশে দাঁড়িয়ে তার স্বপ্ন পূরণে সহযোগিতা করতে?