শাহীন আলম, বাংলাদেশ জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের পেসার। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা সফরে সাফল্য দেখিয়ে নজর কেড়েছেন ক্রিকেটবোদ্ধাদের। শ্রীলঙ্কা সফর, নিজের উঠে আসা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন উলিপুর ডট কমের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আতিক মেসবাহ লগ্ন।
উলিপুর ডট কম: পাড়ার মাঠ থেকে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন। কেমন লাগছে?
শাহীন আলম: অন্যরকম অনুভূতি, বলে বোঝানো সম্ভব না। ভালো খেলার কারণে অল্প দিনেই সবার ভালোবাসা পাচ্ছি। সবাই ফোন করে কথা বলছেন।
উলিপুর ডট কম: বাবা মায়ের প্রতিক্রিয়া কেমন?
শাহীন আলম: আসলে আব্বা-আম্মা সেভাবে ক্রিকেট ঠিকমতো বোঝে না। অনেকটা রাগ করেই ছিলেন। এখন মাশাআল্লাহ ভুল ভেঙেছে।
উলিপুর ডট কম: তিন বছর আগেও পাড়ার মাঠে খেলতেন। এখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে। আজ শাহীন নিজেই নিজেকে কোথায় দেখতে পাচ্ছে?
শাহীন আলম: অনেক দূর এগিয়ে এসেছি। দিনগুলোতে নিজেকে এতোদুর আনতে অনেক কষ্ট করেছি। তাই হয়তোবা আজকে আপনি নিজেও আমার সাথে কথা বলছেন আগ্রহ নিয়ে।
উলিপুর ডট কম: স্বপ্নের জাল বোনা শুরু হয়েছিল কখন থেকে?
শাহীন আলম: আগে সেভাবে ভাবিনি। টেপ টেনিস বল খেলতাম। ২০১৫র শেষের দিকে কুড়িগ্রামে আইসিসি অনুমোদিত বলে বল করা শুরু করি। সেখান থেকেই বোলিং শেখা। একটা ক্যাম্পেইন থেকে বিকেএসপিতে সুযোগ পাই। সেখান থেকেই ইচ্ছা তৈরি হয়। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে সেভাবে সমর্থন পাইনি। একটা জুতাই কিনতে পারিনি। কিন্তু আজ সেই অভাবটা ঘুচে গেছে।
উলিপুর ডট কম: প্রিয় ক্রিকেটার কে?
শাহীন আলম: মাশরাফি ভাই। দেশের বাইরে শোয়েব আকতারকে খুব ভালো লাগে। বিকেএসপিতে মিরাজ ভাই (মেহেদী হাসান মিরাজ) খুব ভালোবাসে আমাকে। দেখা হলে ভাই কথা বলে।
উলিপুর ডট কম: আত্মবিশ্বাস কিভাবে তৈরি হয়েছে?
শাহীন আলম: বোলিং করেই হয়েছে। ২০১৬-১৭ মৌসুমে বিপিএলে নেট বোলিং করেছিলাম। গ্লেন ম্যাকেগ্রাকে নেট বোলিং করে কয়েকবার বিট করেছিলাম। কোচ হোয়াইটমোর স্যার(ডেভিড হোয়াডমোর) খুব প্রশংসা করেছিল। তখন বিশ্বাস হয়েছিল আমি পারব। রিয়াদ ভাইকেও একবার নেটে বল করেছিলাম। উনিও অনেক ভালো পরামর্শ দিয়েছেন।
উলিপুর ডট কম: লক্ষ্যটা কতদুর?
শাহীন আলম: লক্ষ্য আছে দেশের হয়ে জাতীয় দলে খেলব। একজন ভালো বোলার হতে চাই।
উলিপুর ডট কম: শ্রীলঙ্কা সফর, প্রথম অবস্থায় কেমন লাগলো?
শাহীন আলম: অনেক অবাক হয়েছিলাম। ইনজুরিতে থাকায় ৭ দিন অনুশীলন করিনি। প্রস্তুতি ম্যাচেও খুব একটা ভালো করিনি। বিশ্বাস ছিল সুযোগ পেলেই কাজে লাগাবো।
উলিপুর ডট কম: বিদেশের মাঠে প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
শাহীন আলম: আসলে আমি প্রথমে ব্যাটিং করেছিলাম। স্টাইক রোটেট করবার জন্য বলা হয়েছিল। তারপর বোলিং এ নিজের সর্বোচ্চটা দিয়েছি।
উলিপুর ডট কম: আলাদিনের চেরাগ হাতে পেলে কোন তিনটি জিনিস চাইবেন?
শাহীন আলম: প্রথমে ভালো মানুষ হতে চাই, ভালো ক্রিকেট খেলতে চাই, পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।
উলিপুর ডট কম: সেলিব্রেটি মনে হচ্ছে কি?
শাহীন আলম: নাহ, সেভাবে ভাবিনি। সাধারণ মানুষ হয়ে থাকতে চাই। তবে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট আড়াই হাজার ছাড়িয়েছে (হাসি)।
উলিপুর ডট কম: উলিপুর ডট কমের পক্ষ থেকে আপনার জন্য শুভকামনা, স্বপ্নপূরণে এগিয়ে যান।
শাহীন আলম: উলিপুর ডট কমকে ধন্যবাদ। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।