।। নিউজ ডেস্ক ।।
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল আয়তনের বাংলাদেশের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য, বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি, দৃষ্টিনন্দন জীবনাচার মন কাড়ে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ঐতিহাসিক মসজিদ ও মিনার, নদী, পাহাড়, অরণ্যসহ হাজারও সুন্দরের রেশ ছড়িয়ে আছে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত।
দেশের আট বিভাগে (ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ) ৬৪ জেলা। প্রতিটি জেলার নামকরণের সঙ্গে রয়েছে ঐতিহ্যপূর্ণ ইতিহাস। এসব ঘটনা ভ্রমণপিপাসু উৎসুক মনকে আকর্ষণ করে।
কুড়িগ্রাম জনপদ বেশ প্রাচীন। এ অঞ্চলে আর্যরা আসার আগে বাস করতো অনার্যরা। প্রাগৈতিহাসিক যুগে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় গড়ে ওঠা মানব সমাজের আদি অধিবাসী তারাই। ১৯৮৪ সালের ২৩ জানুয়ারি মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত হয় কুড়িগ্রাম।
কুড়িগ্রামের নামকরণ নিয়ে রয়েছে নানান মতবাদ। অনেকে মনে করেন, কুড়িটি পরিবার অথবা অনার্যদের গণনার পদ্ধতি কুড়ি থেকে কুড়িগাঁও ও কুড়িগঞ্জ হয়েছে, যা পরবর্তী সময়ে কুড়িগ্রাম নাম ধারণ করে। কুড়ি শব্দটি অনার্য। এখনও গ্রামবাংলায় কুড়ি হিসেবে গোনার পদ্ধতি চালু রয়েছে। কারও মতে, রঙ্গপুর রাজার অবকাশযাপনের স্থান ছিল কুড়িগ্রাম। প্রচুর বন-জঙ্গল ও ফলমূলে পরিপূর্ণ ছিল এই এলাকা। তাই ফুলের কুঁড়ি থেকে এর নাম হয়েছে কুড়িগ্রাম।
ভাওয়াইয়া গান কুড়িগ্রাম জেলার প্রাণ। এখানে মানুষের জীবনের সঙ্গে মিশে আছে ভাওয়াইয়া গানের সুর। হাজারও ভাওয়াইয়া গানের চারণভূমি এই জেলা। এখানকার মানুষের মুখের ভাষা ও হৃদস্পন্দনে অনুরণিত হয়ে চলেছে ভাওয়াইয়া গান। এ জেলার ওপর দিয়ে বহমান ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, ফুলকুমারসহ ১৬টি নদ-নদী ভাওয়াইয়া গানের উৎস। বেশিরভাগ ভাওয়াইয়া গানে ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা নদীর কথা উঠে এসেছে। নদ-নদীময় প্রকৃতি ও সমৃদ্ধ ভাওয়াইয়া গানের সুবাদে এ জেলা পরিণত হয়েছে ঐতিহ্যময় সাংস্কৃতিক লীলাভূমিতে। জেলার ব্র্যান্ডিং স্লোগান হলো—‘ভাওয়াইয়া গানের ধাম, নদ-নদীময় কুড়িগ্রাম।’
কুড়িগ্রামের দর্শনীয় স্থানের তালিকায় আছে চান্দামারী মসজিদ, মেকুরটারি শাহী মসজিদ, চণ্ডী মন্দির, দোলমঞ্চ মন্দির, ভেতরবন্দ জমিদার বাড়ি, চিলমারী বন্দর, বীর প্রতীক তারামন বিবির বাড়ি ও সংলগ্ন স্থান, হলোখানা ইউনিয়নে ধরলা নদীর তীরে, মোগলবাসা ভাটলার স্লুইসগেট, ধরলা ব্রিজের পাড়-পিকনিক স্পট, ঘোগাদহ বাজার।
সূত্রঃ banglatribune