।। মোন্নাফ আলী ।।
উলিপুরে তিস্তা নদীর পাড় থেতরাই বাজার ঘাট এলাকা থেকে প্রভাবশালী সফিকুল ইসলাম গং চক্র প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। দীর্ঘদিন ধরে এ চক্রটি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত রাখায় ঘাট এলাকায় নদী ভাঙছে। ফলে নদীভাঙনের ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে দুটি গ্রামসহ মসজিদ, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও থেতরাই বাজার এলাকা।
এলাকাবাসী এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডে অভিযোগ করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলন।
জানা গেছে, উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের দড়িকিশোরপুর গ্রাম তিস্তা নদীর ঘাট থেকে একাধিক ড্রেজার দিয়ে দীর্ঘদিন অবাদে বালু উত্তোলন করে ট্রাক্টরের মাধ্যমে বিক্রি করে আসছে সফিকুল ইসলাম গং চক্র। ভুক্তভোগী অনেকেই অভিযোগ করেন, মৌখিকভাবে বাধা দিলে তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে চক্রটি।
গত ৭ নভেম্বর ওই এলাকায় গেলে এলাকার বাসিন্দা আ. মানান, লুৎফর রহমান, জমির উদ্দিন ও আবুল কাশেম জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে নদী থেকে বালু উত্তোলন করার কারণে কিশোরপুর ও দড়িকিশোরপুর গ্রামসহ নদী সংলগ্ন থেতরাই সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবন, থেতরাই পাকার মাথা দ্বিতল জামে মসজিদ ও থেতরাই বাজার এলাকা ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে।
এ ব্যাপারে বালু উত্তোলনকারী সফিকুল ইসলাম, সহিদুল, আ. সালাম, সাইদুল ইসলাম, ইমরান হোসেনকে নিষেধ করলে তারা গুরুত্ব না দিয়ে ভয়ভীতি দেখান।
তাদের অভিযোগ, শুকনো মৌসুমে তিস্তা নদী শুকিয়ে যাওয়ায় ওই এলাকা থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ট্রাক্টর বোঝাই করে বিক্রয় করা হচ্ছে। নদী পাড়ের মানুষের ধারণা, এভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে আগামী বর্ষা মৌসুমে নদী উপকূলের কৃষিজমি, ঘরবাড়ি ও পুরো বাজার এলাকা ভাঙনের মুখে পড়বে।
ওই চক্রের হোতা সফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি ট্রাক্টর বালু এক হাজার টাকা দরে প্রতিদিন প্রায় ৪০-৫০ ট্রাক্টর বালু বিক্রি করা হয়। তিনি বলেন, বালু উত্তোলন করলে নদীর কোনো ক্ষতি হবে না।
থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী জানান, নদী থেকে এভাবে বালু উত্তোলন করা অবৈধ। বালু তুলতে নিষেধ করেছি; কিন্তু প্রভাবশালীদের বালু তোলা থেকে কিছুতেই নিবৃত্ত করা যাচ্ছে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদের তিস্তা নদী থেকে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়েছি। খুব তাড়াতাড়ি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র: সমকাল