।। আব্দুল মালেক ।।
আগামীকাল ১৩ নভেম্বর। উলিপুরে ‘‘হাতিয়া গণহত্যা দিবস”। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল-বদর ও আল-সাম্স বাহিনীর সহযোগীতায় নিরীহ ৬ ’শ ৯৭ জন গ্রামবাসিকে গুলি করে হত্যা করে।
উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার পূর্ব দিকে ব্রহ্মপূত্র নদ বেষ্টিত হাতিয়া ইউনিয়নের দাগারকুটি গ্রামের ঘুমন্ত এসব নিরীহ মানুষকে ধরে এনে পাকিস্তানি হায়েনারা নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে। স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে জঘন্যতম নারকীয় এ হত্যাকান্ডের ইতিহাস জাতীয় পর্যায়ে তেমন গুরুত্ব না পেলেও উলিপুরে মানুুষের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছে। আজও নিহত শহীদদের স্বজনরা খুঁজে ফিরে তাদের আপনজনকে।
দাগারকুটি গ্রামটিকে ঘিরে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করে এলাকার মানুষজন প্রতি বছর শহীদদের স্মরণ করে আসছিল। কিন্তু করালগ্রাসী ব্রহ্মপূত্র নদ দাগারকুটি গ্রামটি তার বুকে ধারণ করে নিয়েছে। বর্তমানে অনন্তপুর বাজারের পশ্চিম দিকে নতুন করে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করে দিবসটি পালন করে আসছেন শহীদ পরিবার গুলোসহ উলিপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
উপজেলা প্রশাসন দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে আগামীকাল সকাল ৮টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও কালো পতাকা অর্ধনমিতকরণ, ৮টা ৫মিনিটে শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও সাড়ে ৮ টায় আলোচনা সভা এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন, হাতিয়া গণহত্যার স্বাক্ষী ও চিলমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলী বীর বিক্রম।
স্বাধীনতা যুদ্ধের এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ ধীরে ধীরে হয়তো মানুষের হৃদয় থেকে মুছে যাবে, কিন্তু শহীদের স্বজনরা তাদের আপনজনদের স্মরণ করবেন সারাজীবন নিরবে-নিভৃতে। গণহত্যার শিকার শহীদ পরিবার গুলোর দাবি হাতিয়া দিবস জাতীয় পর্যায়ে যথাযোগ্য মর্যদায় পালনসহ ক্ষতিগ্রস্থ শহীদ পরিবার গুলোকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পুনর্বাসন করা হোক।