আব্দুল মালেকঃ
উলিপুরে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়িসহ আবাদি জমি। আশ্রয়হীন পরিবারগুলো গবাদি পশু নিয়ে পার্শ্ববর্তি উচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। গত ২ দিনের ভাঙনে ৩ গ্রামের ৩৫ টি বসতবাড়িসহ প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকার আবাদী জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। অব্যাহত ভাঙনের কারনে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষজনের মাঝে আতংকে বিরাজ করছে। উপজেলার হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন বিএসসি বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তবে ভাঙন রোধে কোন ব্যবস্থা নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
গত কয়েকদিনে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে নদ-নদীসহ ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেলে তীব্র ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি হওয়ায় উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের হাতিয়াগ্রাম, নয়াদাড়া, ও কলাতি পাড়া গ্রামে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত ২ দিনের তীব্র ভাঙন ৩৫টি বসত বাড়ি, আবাদী জমি, কলা বাগানসহ ৩ গ্রামের গাছ-গাছালি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন কবলিত পরিবার গুলো গবাদি পশুসহ আশ্রয় নিলেও অনেক পরিবার আবাসিক সংকটে পরেছেন।
ভাঙন কবলিত কলাতি পাড়া গ্রামের আফজাল হোসেন(৫৫) জানান, ‘বাপ-দাদার ভিটে টুকুও চলে গেল। মাথা গোঁজার ঠাঁই আর থাকলো না’। হাতিয়া গ্রামের আবুল হোসেন (৫৫), আজিজুল ইসলাম (৬০), সিরাজুল ইসলাম (৫৪), আহিনা বেওয়া (৬৫) আব্দুল হামিদ, কাচুয়া শেখসহ ক্ষতিগ্রস্থ অনেকের সাথে কথা হয়। তারা জানান, পার্শ্ববর্তী উপজেলা চিলমারীর ফকিরেট এলাকা থেকে অনন্তপুর পালের ভিটা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের নির্মাণ কাজ না হওয়ায় এসব গ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে নয়াডাড়া, মাঝি পাড়া, হাতিয়া মেলা ও হাতিয়া বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। দ্রুত ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানান ভূক্তভোগী পরিবারগুলো।
কুড়িগ্রাম পাউবো’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বলেন, পাউবো’র স্থাপনা ছাড়া জরুরী ভিত্তিতে ভাঙনরোধে কাজ করার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা না থাকায় কোন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোকে সহায়তা প্রদান করা হবে।