আব্দুল মালেকঃ
উলিপুরে অনাবৃষ্টির কারণে সেচ দিয়ে আমন ক্ষেত রোপন করেছে চাষিরা। কিন্ত কষ্টার্জিত সেই ক্ষেত ইউরিয়া সারের তীব্র সংকটের কারনে মারাক্তক ঝুকিতে পড়েছে। চাষিরা ডিলারদের দোকানে ঘুরেও সার পাচ্ছে না। চলতি মৌসুমে একদিকে পানির অভাব,অন্যদিকে সারের অভাবে চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ফলে আমন মৌসুমের শুরুতে সারের সংকটে ফলন বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে। চাষিদের অভিযোগ বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় ডিলাররা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অতি মুনাফার লোভে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরী করেছে।
উপজেলার সার ডিলাররা জানায় বাপারে ভালো সার না থাকায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। চাষিদের অভিযোগ বেশী দাম দিলে সার পাওয়া যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস জানায় উপজেলা ও পৌরসভায় বিসিআইসির অনুমোদিত সার ডিলার রয়েছে ১৪ জন। চুক্তি অনুযায়ী গত আগষ্ট মাসের বরাদ্ধ ডিও করলেও বাপারে ভালো সার না থাকায় ৩৮৬ মেঃ টন সার ডিলারদের সরবরাহ দিতে পারেনি। এদিকে ডিলারদের ঘরে মজুত রয়েছে ২৩৩ মেঃ টন সার কাজেই সার সংকট হওয়ার কোন কারণ নাই। কিন্ত বাজারে খোঁজ খবর নিয়ে দেখা গেছে ডিলারদের ঘরে ভালো সার নাই তবে জমাট বাঁধা সার রয়েছে। কিন্ত চাষিরা জমাট বাঁধা সার নিচ্ছে না। কোন কোন দোকানে কাপকো জমাট বাঁধা ইউরিয়া সার গুড়ো করে প্রতি বস্তা ৮৫০থেকে ৯শো টাকা এবং খুচরা ১৮/২০ টাকা বিক্রি করছে।
সার নিতে আসা হোকডাঙ্গা দালাল পাড়া গ্রামের চাষি হাবিবুর রহমান ও তবকপুর সাদুল্লা গ্রামের উকিল আমিন জানান সার ডিলার ও ব্যবসায়ীদের দোকানে দোকানে ঘুরে কোথাও ইউরিয়া সার পাওয়া যাচ্ছে না। তবে কোন কোন ডিলার ও সার ব্যবসায়ীরা জমাট বাঁধা সার গুড়ো করে ৮/৯ শো টাকা বিক্রি করছে। পরে তারা ডিলার জনতা ট্রেডার্স এর কাছে থেকে কাপকো ইউরিয়া ১ বস্তা ৯০০ টাকা দিয়ে নিয়েছেন। গুনাই গাছ গ্রামের চাষি আমিনুল ইসলাম জানান দিনভর ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের দোকান ঘুরে ১ বস্তা ইউরিয়া সার যোগাড় করতে পারি নাই। তিনি ক্ষোভের সাথে জানালেন সরকারী ভাবে সারের বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য সার মনিটরিং ব্যবস্থা রয়েছে অথচ এখানে সার নিয়ে ডিলাররা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে ও দেখার কেউ নেই। তিনি অন্যের ২ বিঘা জমি বন্ধক নিয়ে ধার দেনা করে অনাবৃষ্টির কারণে সেচ দিয়ে রোপন করেছেন কিন্ত সারের অভাবে তাও হবে না বলে আশংকা করেন। অনাবৃষ্টির কারণে চলতি আমন মৌসুমে সঠিক সময় চারা রোপন করতে পারেনি। পরে সেচ দিয়ে চাষিরা চারা রোপন করলে ও এখন পযর্ন্ত লক্ষ্য মাত্রা অর্জিত হয়নি। চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ২২ হাজার ৩১১ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ২১ হাজার ৮০০শত হেক্টর।
এম কে ট্রেডার্স এর প্রপ্রাইটার মোঃ আব্দুল মালেক জানান, তার ঘরে ২৬ টন জমাট বাঁধা সার রয়েছে। কিন্ত সে সার চাষিরা নিচ্ছে না। এছাড়া গত মাসের ডিও করা ৬৭৫ মেঃ টন সার বাপার গুদাম সরবরাহ দিতে পারেনি। জমাট বাঁধা সার গুলো গুড়া করতে ও আপত্তি জানিয়েছে কৃষি বিভাগ ফলে আমরা এ সার নিয়ে বিপদে আছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অশোক কুমার রায় জানান ডিলারের ঘরে সার পযার্প্ত মজুত রয়েছে। কিন্ত সার গুলো জমাট বাঁধা বলে কৃষকরা নিচ্ছে না। তবে এটা কৃত্রিম সংকট নয়। তবে এই সুযোগে কেউ কেউ বেশী দামে বিক্রি করছে।