আব্দুল মালেকঃ
উলিপুরে প্রায় ৮ কোটি ব্যয়ে ১ বছর আগে নির্মিত টি-বাঁধটি (গ্রোয়েন) তিস্তার ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে। যেকোন মহুর্তে বিলীন হয়ে যেতে পারে ভ্রমণ পিপাসুদের বিনোদন কেন্দ্র হয়ে উঠা টি-বাঁধটি।
কুড়িগ্রাম পাউবো কর্তৃপক্ষ জিও ব্যাগে বালু ভর্তি করে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছেন। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, সম্প্রতি একটি চক্র ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় বাঁধের নীচের মাটি সরে যাওয়ায় টি-বাঁধটি ভাঙনের মুখে পড়েছে।
জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে প্রায় ৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের তিস্তার বাম তীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষায় টি-হেড গ্রোয়েনটি নির্মাণ করা হয়। গত ২০১৭ সালের জুন মাসে নির্মাণ কাজ শেষ হলে তা ধীরে ধীরে ভ্রমণ পিপাসু মানুষের বিনোদন কেন্দ্রে পরিনত হয়। এ অবস্থায় টি-বাঁধটিকে ঘিরে প্রতিনিয়ত শতশত বিনোদন প্রেমী বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ ভীড় জমাতে থাকে। ঘুরতে আসা অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, দেখার মতো তেমন কিছু না থাকলেও বিকেলে গোধুলীলগ্ন যেন মানুষের মন ছুঁয়ে যায়। প্রকৃতির অপরুপ দৃশ্য যেন ক্রমেই তাদের মোহিত করে। তাই পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসেন তারা। টি-বাঁধটি রক্ষায় কুড়িগ্রাম পাউবো’র এমন ধীর গতির কারণে উম্মা প্রকাশ করেন অনেকে। বাঁধটি ভেঙ্গে গেলে এ অঞ্চলের মানুষের বিনোদনের এ স্থানটি হারিয়ে যাবে। বঞ্চিত হবে বিনোদন প্রেমী মানুষ প্রকৃতির এ অপরুপ দৃশ্য অবলোকন থেকে।
কুড়িগ্রাম পাউবো’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম জানান, আমরা গ্রোয়েনটি রক্ষায় জিও ব্যাগে বালু ভর্তি করে ভাঙন থেকে রক্ষার চেষ্টা করছি। তবে হঠাৎ করে ভাঙন শুরু হওয়ায় আপদকালীন প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করা হচ্ছে। স্থানীদের অভিযোগ তিস্তা নদীর ডান তীরে অন্য একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় পানি গতিপথ পরিবর্তন করায় গ্রোয়েনটি ভাঙন মুখে পড়েছে। এছাড়া টি-বাঁধটির সামনে আরো কয়েকটি গ্রোয়েন নির্মাণ করা হলে টি-বাঁধটি রক্ষা করা সম্ভব হবে। এদিকে বাঁধটির সৌন্দর্য্য বর্ধন ও সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে কুড়িগ্রাম পাউবো কর্তৃপক্ষ প্রায় ৪০ লাখ ব্যয়ে গ্রোয়েনটির উপরিভাগ পাঁকা করণের কাজ শুরু করেছে। গ্রোয়েনটি যেখানে ভাঙনের মুখে পড়েছে সেখানে এ মহুর্তে পাঁকাকরণের অর্থ পানিতে যাবে বলে অনেকের অভিযোগ।
টি-বাঁধের দায়িত্বপ্রাপ্ত পাউবো’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, ভাঙন রক্ষায় এখন পর্যন্ত ১শত ৭৫ কেজি ওজনের বালু ভর্তি ৬ শত জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছে। টি-বাঁধটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা গ্রোয়েনটি রক্ষা করে আগামী শুস্ক মৌসুমে সংস্কার কাজ করবো। তিস্তা ব্রীজের কাছ থেকে চিলমারী পর্যন্ত বামতীর রক্ষায় আমরা আরো কিছু গ্রোয়েন নির্মান করার পরিকল্পনা গ্রহন করেছি।