নিউজ ডেস্ক: সামান্য পানি বৃদ্ধিতেই কুড়িগ্রামে ধরলা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে ভাঙনে গৃহহীন হয়ে পড়েছে সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব গ্রামের ১০টি পরিবার। ভাঙনের আতঙ্কে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে আরো অন্তত ১৫টি বসতঘর।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজানের ঢলে ধরলা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। স্রোতের কারণে সারডোব এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। বিলীন হচ্ছে আবাদি জমি, গাছপালা ও ঘরবাড়ি। বর্ষার প্রথম দিকেই এমন ভাঙনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষ।
হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ছাটকালুয়া এলাকার প্রায় দেড় কিলোমিটার পাকা সড়কের অর্ধেক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীতীরবর্তী পরিবারগুলো বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছে। এরই মধ্যে সারডোব গ্রামের তবারক আলী, মালেকা বেগম, লাভলী, মোর্শেদা, এনদাল, আমির আলী, রমজান, জাহিদুল, মকবুল ও মজিদের পরিবার ঘর হারিয়ে পার্শ্ববর্তী বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। হুমকির মধ্যে রয়েছে আরো অনেক পরিবার।
মালেকা বেগম বলেন, ‘ধরলার ভাঙনে সব শেষ। এখন ছেলেমেয়ে নিয়ে কোথায় থাকব, তা জানি না।’ একই এলাকার আমির আলী জানান, ‘হঠাৎ করেই ভাঙন শুরু হয়। আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। ঘরবাড়ির কিছু নদীতে গেছে, কিছু সরিয়ে নিয়েছি। বর্তমানে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। নতুন করে আর বাড়ি করার জায়গা নেই।’
হলোখানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উমর ফারুক জানান, ভাঙনকবলিত পরিবারের তালিকা করে তাদের পুনর্বাসনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিন আল পারভেজ জানান, ভাঙনকবলিতদের টিন সরবরাহ করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন গত মঙ্গলবার জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিসহ ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ওইদিন দুপুরেই তিনি বন্যা পরিস্থিতি ও নদ-নদীর ভাঙন মোকাবেলায় এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।
এ সময় তিনি জানান, বন্যা ও ভাঙন মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া ৭৫৯ টন চাল, ৪ লাখ ১৭ হাজার টাকা ও পর্যাপ্ত শুকনো খাবার মজুদ করা আছে। ফলে যেখানে যখন যা প্রয়োজন হবে, তা সরবরাহ করা হবে।
সুত্র:বণিক বার্তা, জুন ২৯, ২০১৮