আমানুর রহমান খোকন :
রমজান ও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে কুড়িগ্রামের বাজারগুলোর খুচরা ও পাইকারি দোকানে নকল সেমাই ও লাচ্ছার ছড়াছড়ি। এসব খেয়ে পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। অথচ এ ব্যাপারে প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই।
কুড়িগ্রাম আদর্শ পৌর বাজার, জিয়াবাজার, ত্রিমোহনী বাজার, ভোকেশনাল বাজার, খলিলগঞ্জ বাজার, পুরাতন রেলস্টেশনসহ সব হাট-বাজারে খুচরা ও পাইকারি বাজারে রমজান এবং ঈদুল ফিতরকে উদ্দেশ্য করে মজুত করা হয়েছে সেমাই ও লাচ্ছা। নকল লাচ্ছা ও সেমাইগুলো বাহারি রঙের প্যাকেটে মোড়কজাত করা হয়েছে। প্যাকেটের গায়ে বিএসটিআই, ব্যাচ নম্বর, কনজুুমার ও ট্রেডের কোনো সিল নেই। এমনকি উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখও লেখা নেই। অনেক খারাপ অবস্থায় প্লাস্টিকের প্যাকেটে রয়েছে খোলা সেমাই ও লাচ্ছা। যা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পুরাতন শহরের বিড়ি শ্রমিক মুকুল বেওয়া জানান, পরিবারের পাঁচ সদস্য আট রমজান খোলাবাজারের কেনা লাচ্ছা সেমাই খেয়ে পেটব্যথা, বমি ও পাতলা পায়খানায় আক্রান্ত হন।
ক্রেতা-বিক্রেতার মাধ্যমে বেশ কয়েকটি নকল সেমাই ও লাচ্ছা তৈরির কারখানার খোঁজ পাওয়া যায়। অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা পরিবেশে সরকারি নিয়মকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে নি¤œমানের সেমাই তৈরি করছে পুরাতন পশু হাসপাতাল মোড়ে অবস্থিত সুফিয়া মিনি অটো ময়দা মিলের স্বত্বাধিকারী এ্যাপোলো গোপনে তার বাড়িতে। চামের গোলা এলাকার কাশেম বরুণের মালিকানাধীন নামবিহীন বেকারিতে গোপনে তৈরি হচ্ছে ভেজাল সেমাই ও লাচ্ছা।
কুড়িগ্রাম পুরাতন শহরে গুয়াতিপাড়া গ্রামে মঞ্জু হাজীর বাড়িতে চামেলি বেকারির অন্তরালে তৈরি করা হচ্ছে লাচ্ছা। নাগেশ্বরী বাজারে উদয় শাহা ও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কবির উদ্দিন তাদের বাড়ির গোয়ালঘরে তৈরি করছেন লাচ্ছা সেমাই। এসব কারখানায় প্রস্তুত করা লাচ্ছা সেমাই নকল প্যাকেটে ভরিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে। খোলা সেমাই-লাচ্ছায় কোনো নাম থাকে না।
জিয়া বাজারের ব্যবসায়ী বাবু মিয়া জানান, বাজারের বেশিরভাগ সেমাই ও লাচ্ছা স্থানীয় কারখানার তৈরি। সামান্য কিছু আসছে ডিলারের মাধ্যমে বগুড়া থেকে।
কারখানা মালিকরা জানান, কারখানা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তাদের নেই। অধিক লাভের আশায় কারখানাগুলোয় নি¤œমানের ময়দা, পচা তেল ও ডালডার পরিবর্তে নিম্ম মানের চর্বিজাতীয় কেমিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে।
সুফিয়া মিনি অটো ময়দা মিলের মালিক এ্যাপোলো জানান, আমরা লাচ্ছার কোনো প্যাকেট করি না। কেজি দরে খোলা বিক্রি করি। বাজারে কোহিনুর নামের সেমাইগুলো আমাদের। বাজারের নি¤œমানের সেমাই-লাচ্ছাগুলো আমাদের স্থানীয় কারখানার তৈরি নয়। বগুড়া থেকে আনা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন আদর্শ পৌর বাজার পরিদর্শনকালে জানান, রমজান ও ঈদ সামনে রেখে ভেজাল খাবার নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে। ভেজাল খাবারের সন্ধান মিললে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে ।
সুত্র:শেয়ার বিজ