আমানুর রহমান খোকন:
স্বাদু পানিতে গলদা চিংড়ি চাষ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে গত বছর কাজ শুরু করেছে কুড়িগ্রাম মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার। গলদার রেণু ও পোনা উৎপাদনে সফলতা পাওয়ায় এ বছরও গলদা চিংড়ির পিএল (রেণু) উৎপাদন করে কৃষকদের মধ্যে বিক্রি শুরু করেছে।কুড়িগ্রাম মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার সূত্রে জানা গেছে, মিঠা পানিতে গলদা চিংড়ি চাষ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বরগুনার আমতলী ও পায়রা নদী থেকে মা চিংড়ি এবং পেকুয়া, চকরিয়া কক্সবাজার থেকে লবণাক্ত পানি সংগ্রহ করে আনা হয়। সেই পানিতে স্বাদু পানি মিশিয়ে সেখানে মা মাছের ডিম ফোটানো হয়। পরে সে ডিম স্বাদু ও লবণাক্ত পানির মিশ্রণে ২৮-৩২ দিন পর্যন্ত প্রক্রিয়াজাত করে পিএলে (রেণু) পরিণত করা হয়। এবার জেলায় স্বাদু পানিতে চিংড়ি চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় কুড়িগ্রামে মৎস্য বীজ খামারে উৎপাদিত গলদা চিংড়ির রেণু মৎস্যচাষিদের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। গত বুধবার সদর উপজেলার মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারে চিংড়ির পিএল বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান।
কুড়িগ্রাম মৎস্য বীজ উৎপাদন কেন্দ্রে পলদা চিংড়ির রেণু কিনতে আসা উলিপুরের আসাদুজ্জামান জানান, তিনি ১৫-১৬ বছর থেকে কার্প জাতীয় মাছ চাষ করছেন। কুড়িগ্রাম মৎস্য খামারে গলদা চিংড়ির রেণু বিক্রি হচ্ছে জেনে কিনতে এসেছেন। আশা করছেন খামারের কার্প জাতীয় মাছের সঙ্গে গলদা চিংড়ি চাষ করে লাভবান হতে পারবেন। মৎস্য খামার সংলগ্ন কৃষক তারা মিয়া জানান, গত বছর কার্প মাছের সঙ্গে গলদা চিংড়ি চাষ করে লাভ হয়েছিল। এবার চাষ করার জন্য রেণু কিনতে এসেছেন।
কুড়িগ্রাম মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের ব্যবস্থাপক মুসা কলিমুল্লা জানান, প্রথম দিন জেলার চারজন মৎস্যচাষির কাছে ৭০ হাজার চিংড়ির পিএল বিক্রি করা হয়েছে এক টাকা করে। আর একমাস পর খামারে উৎপাদিত প্রতিটি চিংড়ির পোনা ৫-৬ টাকা করে বিক্রি করা হবে। চলতি মৌসুমে পর্যায়ক্রমে জেলায় ১০০ মৎস্যচাষির কাছে তিন লাখ চিংড়ি পিএল (রেণু) ও ৬৫ হাজার জুভেনাইল (পোনা) বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর তিন লাখ পিএল ও ৬৫ হাজার জুভেনাইল উৎপাদন করে ৫০ জন মৎস্যচাষির মাঝে বিক্রি করা হয়েছিল। এতে ব্যয় হয়েছে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা, আর বিক্রি হয়েছে তিন লাখ ৭১ হাজার টাকা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান জানান, স্বাদু পানিতে গলদা চিংড়ি চাষে সফলতা পাওয়া গেছে। কৃষকরাও আগ্রহী হয়ে উঠছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী বছর জেলায় ব্যাপক হারে গলদা চিংড়ি চাষ শুরু হবে।
সুত্র:শেয়ার বিজ,