নিউজ ডেস্ক: সরকারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল না থাকায় চিকিৎসাসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে রৌমারী উপজেলায়। ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও বর্তমানে কাগজে-কলমে ৩ জন চিকিৎসক কর্মরত আছেন। তার মধ্যে প্রশিক্ষণে রয়েছেন ৩ জন। ফলে উপজেলার ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ চিকিৎসাসেবা পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সম্প্রতি চিকিৎসার অভাবে ও ডাক্তারের অবহেলায় ৩-৪ জন শিশু মারা যাওয়ায় সচেতন মহল নড়েচড়ে বসে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকার অনুমোদিত ১৩ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও বর্তমানে ৩ জন চিকিৎসক কর্মরত আছেন। শূন্য ৬ জন। এছাড়া প্রশিক্ষণে রয়েছেন ৩ জন। সাব-সেন্টারে ৪ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও বর্তমানে দু’জন চিকিৎসক কর্মরত আছেন। ৩ জন প্রশিক্ষণে রয়েছেন। দ্বিতীয় ১৫ জন পদ থাকলেও বর্তমানে ১১ জন কর্মরত। একজন ছুটি ও একজন প্রশিক্ষণে। তৃতীয় ৬৪ জন পদ থাকলেও বর্তমানে ৫০ জন কর্মরত। শূন্য ১৪ জন। চতুর্থ শ্রেণীর ২১ জন পদ থাকলেও বর্তমানে ১১ জন কর্মরত রয়েছেন।
এছাড়াও হাসপাতালের মেডিকেল কর্মকর্তা, সহকারী সার্জন, গাইনি ও সার্জিক্যাল স্পেশালিস্টের পদ দীর্ঘদিন থেকেই শূন্য। ওই হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান, সহকারী নার্স, অফিস সহকারী, ঝাড়ুদার, স্বাস্থ্য সহকারী, স্যানিটারি পরিদর্শক, ওয়ার্ড বয়, সুইপার, নৈশ প্রহরীর পদগুলোতেও পর্যাপ্তসংখ্যক জনবল নেই। প্যাথলজি বিভাগ আছে কিন্তু টেকনোলজিস্ট নেই। ফলে রক্ত, মলমূত্র পরীক্ষা করতে রোগীদের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হয়। ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যা করার জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিন আছে কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় সেটি চালু করা যায় না। ডেন্টাল ও চক্ষু রোগ নির্ণয়ের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আছে কিন্তু ডাক্তার নেই, অ্যাম্বুলেন্স আছে চালক নেই। অভিযোগ রয়েছে নার্স ও ওয়ার্ড বয়ের কাছে রোগীর লোকেরা জিম্মি। এছাড়া অ্যাম্বুলেন্স মেরামতের জন্য এডিবির খাত থেকে ১ লাখ টাকা নিয়ে মেরামত করা হলেও কাজ করা হয়নি। উন্নত এসি সিস্টেম সমৃদ্ধ ৩টি অপারেশন থিয়েটার থাকলেও চিকিৎসক না থাকায় সেখানে কোনো অপারেশন করা হয় না। ফলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অপারেশন থিয়েটার। এতে রোগীদের চিকিৎসাসেবা পেতে যেতে হয় বাইরের ক্লিনিক বা হাসপাতালে। রোরবার সরেজমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন করিমন নেছা, আবদুস রশিদ, মমেনা, নুরেজা বলেন, ‘ডাক্তাররা মাঝেমধ্যে আইসা দেইহা যায় ছোড খাড ওষুধপাতি দেয় বেশিরভাগ অষুধ বাইরে থাইকা কিনা আনি।
রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. মো. জোবায়ের রহমান আল মাহমুদ জানান, প্যাথলজি বিভাগে টেকনোলজিস্ট না থাকার বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। চিকিৎসক সংকটের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, আশা করি আর সংকট থাকবে না। এছাড়া শত প্রতিকূলতার মধ্যেও আমরা চেষ্টা করি সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দিতে।
সুত্র:যুগান্তর, ২০ মে ২০১৮