নিউজ ডেস্কঃ
২৭ কুড়িগ্রাম-৩ (উলিপুর) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও কয়েক দফায় মন্ত্রীত্বের দায়িত্ব পালন করা বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ একেএম মাঈদুল ইসলাম মুকুল ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না এলাইহে রাজেউন)। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গত ১৫ এপ্রিল হতে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি ঐ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১ টা ৪০ মিনিটে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। এক ছেলে ও দুই মেয়েসহ তিনি অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। বর্ষীয়ান এ নেতার নামাজে জানাযা শনিবার (১২ মে) সকাল সাড়ে ১১ টায় নিজবাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর স্টেডিয়াম মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। আজ শুক্রবার বাদ জু‘মা ঢাকার আসাদ গেট নিউ কলোনী জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে মরহুমের প্রথম জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। আগামী রবিবার জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিন প্লাজায় ৩য় ও বাদ আসর গুলশান আজাদ জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে ৪র্থ জানাযা নামাজ শেষে তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
কুড়িগ্রামের কৃতিসন্তান সাবেক মন্ত্রী একেএম মাঈদুল ইসলাম মুকুল ১৯৪৩ সালে ২৯ মে জন্ম গ্রহন করেন। উলিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল এন্ড কলেজে পড়াশুনা করেন। পরে কুমিল্লার মতলব হাইস্কুল থেকে ১৯৫৯ সালে মেট্রিক পাস করেন। তিনি রাজশাহী সরকারী কলেজ থেকে ১৯৬১ সালে আইএ পাশ করে করাচী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৬৬ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পাশ করেন।
তিনি ১৯৭৯ ও ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ সরকারের ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বিদ্যূৎ ও জালানি মন্ত্রণালয়, ১৯৮৫-৮৭ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, ১৯৮৮- ১৯৮৯ সালে পাট মন্ত্রণালয় এবং ১৯৮৯ সালে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া জনাব মাঈদুল ইসলাম সর্বশেষ ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে কুড়িগ্রাম-৩ আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপ্রতি মো. আবদুল হামিদ। এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি সাবেক মন্ত্রী মাঈদুলের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
মাঈদুল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বলে সংসদ সচিবালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এক শোকবার্তায় বলেন, “এ কে এম মাঈদুল ইসলাম ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিবিদ । তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন জনদরদী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে হারাল।”
আরও শোক প্রকাশ করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার।
এছাড়া ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, প্রধান হুইপ আসম ফিরোজও পৃথক শোকবার্তায় মাঈদুল ইসলামের আত্মার শান্তি কামনা করেছেন।
তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে নিজ এলাকা উলিপুরেও। গভীর শোক প্রকাশ করেছেন উলিপুর ডট কমের সম্পাদক প্রকৌশলী রূপম রাজ্জাক, উলিপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু সাঈদ সরকার, সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সরদার, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মালেক ও প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দসহ উলিপুরের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।