আঁচল
(সাব্বির নাইম)
শৈশবে আমার নির্দিষ্ট কোন গামছা ছিলো না
মায়ের আঁচলে স্নান শেষে শরীর মোছা
খাওয়া শেষে হাত মুখ মোছা
ছিলো আমার নিত্যদিনের অভ্যাস।
দুপুর রোদে বারান্দায় মায়ের আঁচলে নিশ্চিন্তে ঘুমাতাম
হাতপাখা বিহীন রাতে মা আঁচল দিয়ে বাতাস দিতেন।
মায়ের কখনো গরম লাগতো না,
স্নান শেষে মাকে কখনো শরীর মুছতে দেখিনি,
দুপুর রোদে মা কখনো বারান্দায় ঘুমাতেন না,
খাওয়া শেষে মায়ের কখনো মুখ মোছা লাগতো না,
আর এসব যদি লাগতোই, তবে মা কি করতেন?
মায়ের তো মা ছিলো না।
দুপুরের শেষে হকার যখন ডাক হাঁকতেন
মা আঁচলের গিট খুলে টাকা দিতেন
আমি চানাচুর আর কটকটি খেতাম
মুখ, গাল, ঠোঁট ভরিয়ে রাখতাম আঠায়
মা, আঁচল দিয়ে মুছে দিতেন ভালোবাসায়।
স্কুলে দিতে যাবার সময় প্রায়শই দেখতাম
মা আঁচল দিয়ে ছাতা ধরতেন মাথায়
স্কুল থেকে ফিরলে ,মা দৌড়ে এসে বুকে জড়িয়ে
আঁচল দিয়ে মুখের ঘাম মুছতে থাকতেন।
জ্বর এলে মা জলপট্টি দিয়ে দিতেন আঁচল ভিজিয়ে
ঠান্ডা লাগলে নাক মুছতাম মায়ের আঁচলে
ভয় পেয়ে মায়ের আঁচলে লুকিয়ে পড়তাম।
মা কখন ভয় পেতো না,
মাকে কখনো চানাচুর আর কটকটি খেতে দেখিনি,
মায়ের কখনো ছাতা লাগতো না,
মাকে কখনো ঘামতে দেখিনি আমি,
মায়ের কখনো জ্বর ঠান্ডা হতো না,
আর এসব যদি হতোই, তবে মা কি করতেন?
মায়ের তো মা ছিলো না।