আব্দুল মালেকঃ
সকাল থেকে সন্ধ্যা জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা এক জীবন সংগ্রাম। দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের জন্য সবার দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করেন ছালেহা বেওয়া (৭০)। পায়ে হেঁটে পথ চলেন মাইলের পর মাইল। তবুও ক্লান্তিহীন তিনি। পাশে দাঁড়ানোর যারা ছিল তারা মারা গেছে। আশ্রয় হয়েছে দিনমজুর জামাইয়ের বাড়িতে। শরীরে বহন করছেন বিশাল আকৃতির ঘ্যাঁগ (গলগন্ড)। আর যেন চলতে পারছেন না। ক্লান্ত এ জীবন সায়াহ্নে শুধুই আক্ষেপ রাতে ঘুমাবার ঘর নেই, নেই কবর দেয়ার জায়গা। ভাগ্যে জোটেনি বিধবা কিংবা বয়স্ক ভাতার কার্ড।
উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের পাতিলাপুরী (নারীর খামার) গ্রামের হত দরিদ্র মোক্তার আলীর স্ত্রী ছালেহা বেওয়া (৭০)। স্বামীও ভিক্ষা করে সংসার চালাতেন। ১০ বছর আগে স্বামী মারা গেলে একমাত্র পূত্র সন্তান আমিনুর রহমান দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাতেন। ২ বছর পর একমাত্র ছেলেও মারা যান। বৃদ্ধ বয়সে ছালেহার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। কোথায় যাবেন, কি খাবেন? এ অবস্থায় ঠাঁই হয় হত দরিদ্র মেয়ে মোর্শেদা বেগম ও দিনমজুর জামাইয়ের সংসারে। তাদেরও সংসারে চলে টানা পোড়ান। বাধ্য হয়ে ছালেহাকে নামতে হয় ভিক্ষাবৃত্তিতে।
ছালেহা জানান, এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বারের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও পাননি বিধবা ও বয়স্ক ভাতার কার্ড। বলেন, ‘৩-৪ হাজার ট্যাকাও দিবের পাং নাই কাডো পাং নাই। ভাতে জোটে না চিকিৎসা করোং কি দিয়া’। এভাবেই চলছে ছালেহার জীবন সংগ্রাম। কিন্তু কেউ কী এগিয়ে আসবেন তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে। মিলবে কী বয়স্ক কিংবা বিধবা ভাতার কার্ড।
এ বিষয়ে থেতরাই ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আইয়ুব আলী সরকার বলেন, আমি ঐ ওয়ার্ডের মেম্বারকে বলেছি, ভাতা দেয়ার জন্য। উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, কার্ড প্রাপ্তির বিষয়টি দ্রুত নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হবে। কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডাঃ এসএম আমিনুল ইসলাম অপারেশনের উদ্যোগ নিবেন বলে জানান।