হাফিজ সেলিমঃ
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে গুরুত্বর আহত জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য উলিপুরের রাশেদুজ্জামান রাশেদ (২৮) মারা গেছেন। তার মরদেহ রোববার (০১ এপ্রিল ২০১৮) রাতে উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের কিশামত মধুপুর গ্রামে পৌছিলে মা, ভাই-বোন, স্ত্রী, শিশু সন্তানসহ এলাকাবাসীর কান্নায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
নিহত রাশেদের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের কিশামত মধুপুর গ্রামের মৃত মোস্তাফিজুর রহমানের পুত্র রাশেদুজ্জামান রাশেদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬০ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ঢাকা সাভার সেনানিবাসে কর্মরত থাকা অবস্থায় দশ মাস পূর্বে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্য হিসাবে মালিতে যান। জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় ২৮ ফেব্রুয়ারী মালির মোপ্তি এলাকায় গাড়িতে করে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরন ঘটলে ঘটনাস্থলই চার বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন। এ সময় রাশেদুজ্জামান রাশেদসহ আরও চারজন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী গুরুত্বর আহত হন। আহতদের মালির সেনেগালের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ মার্চ রাশেদুজ্জামান রাশেদ এর মৃত্যু হয়।
রোববার (০১ এপ্রিল ২০১৮) রাত দশটার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল রাশেদের লাশ নিয়ে গ্রামে পৌছিলে মা রাহেনা বেগম, ছোট বোন মুক্তা বেগম, ভাই মিরাজ বাবু ও স্ত্রী তামান্না আক্তার মিতু কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এসময় তারা বার বার মুর্ছা যাচ্ছিল। এ সময় উপস্থিত শত শত এলাকাবাসী এ হৃদয়বিদারক ঘটনা দেখে কান্না ধরে রাখতে পারেননি। এরপর সেনাবাহিনীর দলটি সশস্ত্র মৃত সালাম প্রদর্শনের মাধ্যমে তাকে সম্মান জানান। জানাযা শেষে রাতেই তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। রাশেদের মা রাহেনা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, তিন ভাই বোনের মধ্যে সে ছিলো সবার বড়। দশ মাস পূর্বে রাশেদের বাবা মারা যান। এরপরই শান্তিরক্ষী বাহিনীতে আমার ছেলে বিদেশে চলে যান। তার স্ত্রীসহ দেড় বছরের তাহমিদুজ্জামান তুরান নামের শিশু সন্তান রয়েছে। রাশেদেই ছিলো পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি, সেও চলে গেলো। স্বামীর পর সন্তানকে হারিয়ে রাহেনা বেগম এখন দিশেহারা।
সূত্রঃ bd24report