আমানুর রহমান খোকন:
কুড়িগ্রামে উন্নত জাতের বিটি বেগুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা। রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাসম্পন্ন ও অধিক উৎপাদনশীলতার এ বেগুন স্বাদে ও গুণে বেশ ভালো মানের হওয়ায় ভোক্তাদের মধ্যেও এর চাহিদা বাড়ছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের রাজস্ব অর্থায়নে জেলায় ৭০টি প্রদর্শনী ক্ষেতে এ বেগুন চাষ করা হয়েছে বলে জানা গেছে, যা জেলাজুড়েই এর বেশ পরিচিতি এনে দিয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানিয়েছে, স্থানীয় জাতের বেগুনে অনিয়ন্ত্রিতভাবে দিনে দুবার কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়, যা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে। পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থের জন্য বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে। এছাড়া এসব বেগুনের মানও বেশি ভালো নয়। বেগুনের সবচেয়ে ক্ষতিকর পোকা হিসেবে পরিচিত ডগা ছিদ্রকারী পোকা। এ পোকার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ও কীটনাশক প্রয়োগ না করে আদর্শ প্রকল্পের আওতায় কুড়িগ্রামে কৃষি বিভাগ বিটি বেগুনের চাষ পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করে।
এবার ৭০টি প্রদর্শনী প্লটে ৩০ একর জমিতে বিটি বেগুন চাষ করা হয়েছে। এ বেগুন চাষ করে কৃষককে আর ডগা ছিদ্রকারী পোকার জন্য কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না। অন্যান্য সুষম সার প্রয়োগ করেই আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন এসব কৃষক। এতে পরিবেশের ভারসাম্য যেমন রক্ষা হচ্ছে তেমনি স্বল্প খরচে অধিক উৎপাদন হচ্ছে। ফলে জেলার কৃষকরা উৎসাহিত হচ্ছেন বিটি বেগুন চাষে। চলতি বছর কুড়িগ্রাম জেলায় ৮৯২ হেক্টর জমিতে এ বেগুন চাষ করা হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানিয়েছে।
প্রদর্শনী ক্ষেতের মালিক আবদুল মোত্তালেব জানান, ৩০ শতাংশ জমিতে বিটি বেগুন চাষ করতে তার মাত্র বিশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। উৎপাদন ভালো হওয়ায় এবার অন্তত ৫০ হাজার টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন তিনি।
কুড়িগ্রামের জিয়া বাজারে সবজি ক্রেতা বুলু মিয়া বলেন, ‘আমি বেগুন কিনলে উন্নত জাতের বিটি বেগুন কিনে থাকি। এই বেগুনের স্বাদ ও পুষ্টি দুটোই মানসম্মত।’
জেলার কৃষক ও এ বেগুন চাষের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিটি বেগুন পরিবেশ সম্মত উন্নত জাতের সুস্বাদু বেগুন। এই বেগুন ডগা ছিদ্রকারী পোকা সহনশীল। এতে শুধু সুষম সার প্রয়োগ করলেই হয়। কীটনাশক সার প্রয়োগ করার প্রয়োজন পড়ে না। চলতি বছর সরকারিভাবে ৭০টি ক্ষেতে বীজ ও সুষম সার প্রয়োগ করে প্রদর্শনী ক্ষেত তৈরি করা হয়েছে, যা কৃষক ও ভোক্তাদের আগ্রহী করে তুলেছে বলে জানা গেছে।
সুত্র:শেয়ার বিজ, মার্চ ৩১, ২০১৮