আব্দুল মালেকঃ
উলিপুরে দেশি বস্তায় বিদেশি ইউরিয়া ও ওজনে ৪/৫ কেজি কম দিয়ে সরকারের বেধে দেয়া মুল্যের অতিরিক্ত ১‘শ থেকে ৫‘শ টাকা বেশি দামে ইউরিয়া ও নন ইউরিয়া সার বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে প্রতারিত ও আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষক।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে ২০ হাজার হেক্টর লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হলেও অর্জিত হয়েছে ২২ হাজার হেক্টর। কৃষক পর্যায়ে সার বিতরণ নিশ্চিত করতে ১৪ জন ডিলার ও মফস্বল পর্যায়ে ৪৫ জন খুচরা ডিলার রয়েছে। তারা প্রতিমাসের বরাদ্দ উত্তোলন করছেন। ফলে বাজারে সারের কোন সংকট নাই। তবে বেশি দাম ও ওজনে কম দেয়ার বিষয় কৃষকরা অভিযোগ করছেন।
কৃষক ও খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ , বিদেশি চায়না ও সৌদি আরব থেকে আমদানি করা ইউরিয়া ও নন ইউরিয়া সার ডিএপি বাংলাদেশি সারের বস্তায় ৪-৫ কেজি ওজনে কম দিয়ে নিজস্ব সেলাই মেশিনে সেলাই করে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ৭‘শ টাকার ইউরিয়া সার ৮২০-৮৩০ টাকা ও নন ইউরিয়া (চায়না ড্যাপ) ডিএপি সার বাংলাদেশি বস্তায় ভরে ১২‘শ ৫০ টাকার স্থলে ১৮‘শ টাকায় বিক্রি করছে। ফলে প্রতারিত ও আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন তারা। বাজারে খোঁজ নিয়ে এর সত্যতাও মিলেছে।
খোঁদ ডিলাররা ৮‘শ টাকা বেঁধে দেয়া দেশি ইউরিয়া ৮‘শ ২০ থেকে ৮‘শ ৩০ টাকা, চায়না ও সৌদি আরবের ইউরিয়া ৭‘শ টাকার স্থলে ৭‘শ ৬০ টাকা থেকে ৭‘শ ৭০ টাকায় বিক্রি করছে। আবার কোন ডিলার চায়না ও সৌদির আরবের ইউরিয়া বাংলাদেশি সারের বস্তায় ভরে ৭‘শ টাকার সার ৮‘শ থেকে ৮‘শ ২০ টাকা বিক্রি করছে। নন ইউরিয়া চায়না ড্যাপ ডিএপি সার বাংলাদেশি ডিএপির বস্তায় ভরে ১২‘শ ৫০ টাকার স্থলে ১৮‘শ টাকা বিক্রি করছে।
গুনাইগাছ ইউনিয়নের কৃষক নুর ইসলাম (৫৫), হাতিয়া ইউনিয়নের কৃষক আবুল কাশেম বাদশা (৬০) জানান, ডিলারের কাছ থেকে সার নিয়ে ওজন করে দেখা যায় বস্তাতে ৪ থেকে ৫ কেজি সার কম। এ ব্যাপারে আপত্তি জানালে ডিলার বলেন বাপার থেকে কম এসেছে আমরা কি করব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খুচরা ডিলার জানান, দেশি বস্তায় বিদেশি সার ভরে প্রতি বস্তায় কম দেয়া ও দামের হেরফের সব তুঘলকি কারবার হচ্ছে ডিলারের ঘর থেকে, আমাদের করার কিছু নাই। এতে আমরা ব্যবসায়ীরাও মার খাচ্ছি।
ডিলার আব্দুল মালেক (এমকে ট্রেডাস) জানান, বিদেশি ইউরিয়ার বস্তা খারাপের কারণে বস্তা পরিবর্তন করতে হচ্ছে এবং বস্তায় বাপার থেকে সার কম দেয়া হচ্ছে এবং খারাপ সার নিতেও বাধ্য করানো হচ্ছে। সকুড়িগ্রাম বাপার সার গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল জানান, ৫০ কেজির বস্তা আমরা তাদের বুঝে দেই তবে ক্ষেত্র বিশেষে ১কেজি কম থাকতে পারে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার।
উপজেলা কৃষি অফিসার অশোক কুমার রায় জানান, বেশি দাম নিচ্ছে এ অভিযোগ কেউ করেনি। তবে বাপার থেকে কম দেয়া হচ্ছে এটা ডিলাররা অভিযোগ করেছেন। আমরাও বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। উপজেলা নিবার্হী অফিসার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, সার ব্যবস্থাপনায় বস্তা পরিবর্তন করা দন্ডনীয় অপরাধ। দাম ও বেশি নেয়া যাবে না। বিষয়টি তার জানা নেই তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।