আব্দুল মালেকঃ
বন্যার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাড়িয়েছে কৃষকরা। চরাঞ্চল গুলোতে এখন সবুজের সমারোহ। কোথাও ভূট্টার ক্ষেত, আবার কোথাও মাসকালাই আর সরিষা। লাউ কুমড়োয় যেন কৃষকের চোখেমুখে স্বস্তির সুবাতাস। গত দু’দফা বন্যায় ব্রহ্মপূত্র, ধরলা ও তিস্তা নদী বেষ্টিত উলিপুর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রায় ১২হাজার ৫’শ হেক্টর ফসলি জমি ও ৪২ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, বন্যায় মানুষের জীবন ও জীবিকায়নের অপূরনীয় ক্ষতির পরেও কৃষি বিভাগের পরামর্শ এবং সহযোগিতায় কৃষকরা আমন ফসলের বাম্পার ফলন ঘরে তুলেছিল। সরকারিভাবে কৃষি পূনর্বাসন কার্যক্রমের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ঘুরে দাড়াতে সক্ষম হয়েছে। ইতিমধ্যে কৃষি প্রণোদনা কার্যক্রমের মাসকালাই ও সরিষা ফসল কৃষকেরা সংগ্রহ করেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার অশোক কুমার রায় জানান, দু-দফা বন্যার পর ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ৬ হাজার ১’শ ৯৯ জন চাষীকে কৃষি পূনর্বাসন ও প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় প্রয়োজনীয় বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের তৎপরতার প্রণোদনাকৃত ফসলের যথাযথ পরিচর্যার কারণে পূনর্বাসনের সর্বোচ্চ সুফল পাচ্ছেন কৃষকেরা।
উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মাষ্টারপাড়া গ্রামের কৃষক সায়েদ আলী ও রফিকুল ইসলাম জানান, কৃষি বিভাগ থেকে মাসকালাই বীজ ও সার পেয়ে ১ বিঘা জমিতে চাষ করে ৫ মন করে ডাল পেয়ে সে খুশি। উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম কৃষি পূনর্বাসনের বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষ করে লাভবান হয়েছেন বলে জানান। সরিষা বিক্রি করে সে বোরো ধান চাষের সার ও অন্যান্য ব্যায় সহজেই করতে পেরে খুশি। একই ইউনিয়নের কৃষক রুহুল আমীন মিলিটারী জানান, কৃষি পূনর্বাসনের ভূট্টা বীজ চরের জমিতে চাষ করেছে। বর্তমানে ভূট্টাতে মোচা আসছে। তিনি আশা করেন, এই ভূট্টাই তার পারিবারিক অভাব পূরনে সহায়তা করবে।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন বলেন, বন্যার পরে কৃষি বিভাগ হতে সময়মত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে পূনর্বাসনের বীজ ও সার বিতরণ করায় কৃষি পূনর্বাসনের সুফল কৃষকেরা ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগ সময়মতো বীজ ও সার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দেয়ায় এ উপজেলায় সরকারের কৃষি পূনর্বাসনের কার্যক্রম সফলতা লাভ করেছে।