স্টাফ রিপোর্টার:
উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের যমুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবু জগতপতি বর্মাকে নিজের স্কুল ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে একই স্কুলের অপর দুই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত দুই সহকারী শিক্ষক হলেন ওয়াজেদ আলী ও বাসুদেব মোহন চাকি (বাপ্পি)। তাদের নেতৃত্বে একটি স্বার্থান্বেষী মহল বাবু জগতপতি বর্মাকে বিভিন্নভাবে হয়রানির চেষ্টাও করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি স্কুল প্রাঙ্গণে প্রধান শিক্ষক বাবু জগতপতি বর্মার সঙ্গে স্কুলের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা করেন অভিযুক্ত দুই শিক্ষক ওয়াজেদ আলী ও বাসুদেব মোহন চাকি (বাপ্পি)। এক পর্যায়ে তারা বাবু জগতপতি বর্মার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় তারা বাবু জগতপতি বর্মাকে স্কুল থেকে চলে যাওয়ার হুমকি দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রত্যক্ষদর্শী এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক বাবু জগতপতি বর্মার সঙ্গে বাসুদেব মোহন চাকি (বাপ্পি) ও ওয়াজেদ আলীর ঘটনার সূত্রপাত স্কুলে গাঁজা সেবন নিয়ে। এ দুই শিক্ষক প্রায়ই দেরি করে স্কুলে আসতেন এবং স্কুল প্রাঙ্গণেই সিগারেট ও গাঁজা সেবন করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বাবু জগতপতি বর্মা এর প্রতিবাদ করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তারা বাবু জগতপতি বর্মাকে লাঞ্ছনা করার পরিকল্পনা করতে থাকেন। আজীবন সম্মানিত এ শিক্ষক জীবনের হুমকির মুখে ও নিজের সম্মানার্থে স্কুল থেকে চলে যাওয়ার সিদ্ধ্বান্ত নেন।
অভিযুক্ত দুই সহকারী শিক্ষক বাসুদেব মোহন চাকি (বাপ্পি) ও ওয়াজেদ আলীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, প্রধান শিক্ষক বাবু জগতপতি বর্মা এলাকার একজন সম্মানিত ব্যক্তি এবং তিনি দীর্ঘদিন ধরেই সুনামের সঙ্গে শিক্ষকতা করে আসছেন। ২০১৭ সালে কুড়িগ্রাম জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী বাবু জগতপতি বর্মা একাধারে একজন শিক্ষক, ভাওয়াইয়া গানের শিল্পী এবং একজন গবেষক।
বাবু জগতপতি বর্মা যখন থেকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যমুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন তখন থেকেই মূলত স্কুলটি নানা সাফল্য পেতে থাকে। শিশুর প্রতিভা অন্বেষণে তার মতো জহুরীর তুলনা পাওয়া সত্যিই কঠিন । নিজে গণিতে অসামান্য প্রতিভাবান হওয়ায় শিশুর গাণিতিক ও যুক্তি বিকাশে তার তুলনা অতুলনীয়। অজো পাড়া গাঁ থেকে অনেক প্রতিভাবানকে তিনি তুলে দিয়েছেন সফলতার সিঁড়িতে। তার হাতে গড়ে ওঠা মেধাবী শিক্ষার্থীদের কয়েকজন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে দেশের নামকরা প্রতিষ্ঠানে সফলতার সঙ্গে কাজ করছেন।