হাফিজ সেলিম:
ঠান্ডায় জুবুথুবু উলিপুরের ছিন্নমুল মানুষ। ঠান্ডার প্রকোপ যতই বাড়ছে, শীতবস্ত্রের অভাবে মানুষ ক্রমেই কাবু হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে তিস্তা ও ব্রহ্মপূত্র নদ বেষ্ঠিত চলাঞ্চলের ছিন্নমুল মানুষ নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।
এদিকে উপজেলার সর্বত্রই গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে মানুষজন। ঠান্ডা নিবারন করতে আগুন কুন্ডলী সাজিয়ে কিছুটা উষ্ণতা নিতে হতদরিদ্র পরিবারের ১ প্রসুতি সহ ২ জন আগুনে পুড়ে গেছে। গুরুতর অসুস্থ্য হরিমনি দাস(১৮) কুড়িগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, তার শরীলের ৪৫ ভাগ পুড়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৫ জানুয়ারী সকাল ৭ টায় হাতিয়া ইউনিয়নে মাঝিপাড়া গ্রামে। এদিকে একই ইউনিয়নের দেবনাথের স্ত্রী জেবা (২৮) নামের এক মহিলাও আগুনে পুড়ে গেছে। তার অবস্থা আশংকাজনক হলেও হাসপাতালের ব্যয়ভার বহন করার সামর্থ্য না থাকায় তাকে বাড়িতে নিয়ে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে ওই ইউপি’র চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন জানান।
জানা গেছে, উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর মাঝি পাড়া গ্রামের সবিন্দ্র দাসের স্ত্রী হরিমনি গত ১৪ জানুয়ারী সন্তান প্রসব করে। ওই দিন প্রচন্ড শীত নিবারনের জন্য ঘরের ভিতর খড়কুঠা জ্বালিয়ে আগুনের উষ্ণতা নেয়ার সময় তার পরনের কাপড়ে আগুন লেগে গেলে সে চিৎকার করতে থাকে। পরিবারের লোকজন এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে এবং তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করান।
এ নিয়ে উলিপুরে শীতে আগুনের তাপ নিতে গিয়ে ২ জন অগ্নিদগ্ধ হয়। কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের আর এম ও ডাঃ শাহীনুর রহমান জানান, অগ্নিদগ্ধ ২ জনের শরীরের অধিকাংশ পুড়ে গেছে।
এদিকে তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেলে ও শীতের দাপট কমছে না। শীতের কারনে ছিন্নমুল মানুষের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। শীতজনিত রোগ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।
হাসপাতালে শীতজনিত রোগির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতেও শীতজনিত রোগির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২ দিনে উলিপুর হাসপাতালের শিশু ওয়াডে ডাইরিয়া আক্রান্ত হয়ে ১৩, নিমনিয়ায় আক্রান্ত ১০ জন সহ শীতজনিত রোগে ৪৭ জন ভর্তি হয়েছে বলে আর এম ও ডাঃ রফিকুল ইসলাম সরদার জানান। এদিকে আউটডোরে ৩৮৩ জনকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, অগ্নিদগ্ধ জবাকে ১০ হাজার ও হরিমনিকে ৫ হাজার টাকাসহ প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র প্রদান করা হয় এবং শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।