রাজনীতির বাইরে ঢাকায় ভাই বললেই আমরা যে ভাইকে চিনে থাকি তিনি আমাদের ডলার ভাই। যার কর্মযজ্ঞ দেখলে মনে হবে তিনি ঢাকায় থেকেও যেন সমানতালে জন্মভূমি প্রিয় কুড়িগ্রামে অবস্থান করছেন। বলছিলাম সাইদুল আবেদীন ডলার ভাইয়ের কথা। জন্ম ১৯৬৭ সালের ১৫ই জানুয়ারি, কুড়িগ্রামের এক মুসলিম ও শিক্ষিত পরিবারে। সাদা মনের সদা হাস্যোজ্জল মানুষ, সবসময় স্বপ্ন দেখেন সামজিক উন্নয়নে সমৃদ্ধ কুড়িগ্রামের। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত কুড়িগ্রামে পড়ালেখার পর রংপুর কারমাইকেল কলেজে অনার্স এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেই জীবিকার খোঁজে ঢাকায় পাড়ি জমান তিনি। কিন্তু ডলার ভাইয়ের কাছে গেলে শেকড়ের কাঁচা গন্ধ পাই আমরা। কুড়িগ্রামের কিশোর থেকে শুরু করে পঞ্চাশোর্ধ্ব যে কেউ অবলীলায় তাকে ডলার ভাই বলে ডেকে থাকেন।
তাঁর সম্পর্কে কুড়িগ্রাম জেলা জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর জনাব আব্রাহাম লিংকন বলেছেন – “ডলার। নামটা উচ্চারণের সাথে ওর বড় ভাই রুবেলের কথা মনে পড়ে যায়। ওরা দু’ভাই আমার বন্ধু। ওদের মা একজন আলোকিত মানুষ। আমাদের গ্রাম সমাজে হাতেগোনা অগ্রবর্তী নারীদের তিনি অন্যতম। ওদের বাবা চিলমারী-রৌমারী রনাঙ্গণের অন্যতম সংগঠক। এরকম আলোকিত পরিবারে জন্ম নেয়া ডলার সঙ্গত কারণেই সমাজে ইতিবাচক অবদান রাখবে সেটিই স্বাভাবিক। ঢাকা শহরে আমাদের আশ্রয়ের ঠিকানাই ডলার। জন্মদিন মানে আয়ু কমে যাওয়ার খবর। আশাকরি ও যতদিন বেঁচে থাকবে কুড়িগ্রামের নাগরিক সমাজের জন্য কাজ করে যাবে। ওর জন্ম পরিবার ও সমাজকে আলোকিত করুক”।
ঢাকাতে প্রথম অবস্থায় একটি প্রাইভেট ফার্মে চাকরী করেন ডলার ভাই, আর নিজেই ব্যবসা করার রাস্তা খোঁজেন। এক পর্যায়ে তিনি বনে যান ব্যবসায়ী। এখন বেশ চলছে তাঁর ব্যবসা। স্বীকৃত ব্যবসায়ী হয়ে ব্যবসার জগতে বেশ পরিচিতিও আছে আমাদের ডলার ভাইয়ের। ব্যবসায়িক শত ব্যস্ততার পরেও তিনি প্রতিনিয়ত প্রাণের সন্ধান করেন কুড়িগ্রাম থেকে আসা বন্ধু বা ছোট ভাইবোনদের মাঝে। আড্ডার ছলে তিনি খোঁজ খবর রাখেন সবার, সব পরিস্থিতির। তার কান পর্যন্ত পৌঁছালে যেকোন সমস্যা যেন আলোকগতিতে সমাধান পায়।
তারুণ্যের প্রতীক ডলার ভাই স্বপ্ন দেখেন তরুণদের নিয়ে, সাহস দেন এগিয়ে যাবার। কুড়িগ্রামের তরুণদের নিয়ে এক অনন্য প্লাটফর্ম তৈরি করেছেন তিনি। স্বভাবজাত ভালবাসায় আগলে রাখেন এবং উজ্জীবিত করে থাকেন ডলার ভাই। তরুণদের মাঝেই নিজের তারুণ্য খুঁজে ফেরেন তিনি। কারণ ছাত্রজীবনে তিনি খেলাধুলা এবং সামাজিক কাজেই বেশি সময় কাটিয়েছেন। ছিলেন ইনডোর গেমসে রানার্স আপ।
রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গনকমিটি, কুড়িগ্রাম – এর প্রধান সমন্বয়ক জনাব নাহিদ হাসান নলেজ ডলার ভাইকে নিয়ে বলেছেন – “সকল নদীর অশ্রু যেমন অবশেষে ব্রহ্মপুত্রে মেশে, তেমনি কুড়িগ্রামবাসীর সবার দুঃখ যেন ডলার ভাইয়ের বুকে বাজে”।
ঢাকাস্থ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওএস ক্লিকস – এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও উলিপুর ডট কমের সম্পাদক রূপম রাজ্জাক বলেছেন, ডলার ভাই যেভাবে কুড়িগ্রামকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন বা ভাবতে পারেন, সেভাবে আর কয়েকটি মানুষ ভাবলেই অনেক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। তাঁর ভালোবাসা ও আন্তরিকতা তাঁকে ঢাকায় কুড়িগ্রাম জেলার তরুণ-যুবকদের অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ করেছে। জন্মদিনে তাঁকে অনেক শুভেচ্ছা।
আমাদের ডলার ভাই ঢাকাস্থ কুড়িগ্রামবাসির সংগঠন “কুড়িগ্রাম সমিতি, ঢাকা” – এর মহাসচিবের দায়িত্বে রয়েছেন। বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনেও রয়েছে তাঁর ভূমিকা। শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ, কোনো রোগীর চিকিৎসার খরচ, উন্নয়নের পক্ষে মানববন্ধন, খেলাধুলা আয়োজন, বনভোজন আয়োজন, কোনো শিক্ষার্থীর ভর্তি এবং বই কেনাসহ নানান কাজে সহায়তা করে থাকেন। তাঁর কানেক্টিভিটি অর্থাৎ মানুষের সাথে তাঁর যোগাযোগ দক্ষতা অসাধারণ। এই বিষয়টি তাঁর এই সামাজিক কাজের বড় সহায়তার উৎস।
আজ আমাদের প্রিয় ডলার ভাইয়ের জন্মদিন। শুভ জন্মদিন। হাজার বাগানের লক্ষ-কোটি বিশুদ্ধ গোলাপের শুভেচ্ছা জানাই প্রিয় মানুষ আমাদের ডলার ভাইয়ের জন্মদিনে।
লেখকঃ
মোনছাফা আক্তার তৃপ্তি, সহ-সভাপতি, গণকমিটি, ঢাকা মহানগর শাখা এবং
সাখাওয়াত স্বপন, সাধারণ সম্পাদক, গণকমিটি, ঢাকা মহানগর শাখা
সূত্রঃ AllBanglaNews.Net