নিউজ ডেস্কঃ
টানা ৫ দিনের শৈত্যপ্রবাহে প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামের মানুষের জীবনযাত্রা। বিকাল থেকেই তাপমাত্রা নিম্নগামী হওয়ায় সন্ধার পরপরই ফাকা হয়ে যাচ্ছে রাস্তা-ঘাট। এ অবস্থা চলছে পরদিন দুপুর পর্যন্ত। খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষজন।
গরম কাপড়ের অভাবে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষেরা। এ অবস্থায় কাজে বের হতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। শিশু ও বৃদ্ধারা শীত জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছে।
জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে নিউমোনিয়া ও শ্বাস কষ্টে আক্রান্ত হয়ে ৩৫ শিশু, ডায়রিয়ায় ২০জন, অন্যান্য রোগে ৪৩ জন ভর্তি হয়েছে।
সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, সদর হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৮ জন ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ অবস্থায় সকাল থেকে কনকনে ঠান্ডা আর উত্তরীয় হিমেল হাওয়া বৃদ্ধি পাওয়ায় কাহিল হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামের মানুষ।
নদ-নদী বেষ্টিত এ জেলায় দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেশি হওয়ায় গরম কাপড়ের অভাবে অবর্ণনীয় কষ্ট ভোগ করছে তারা। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছে বৃদ্ধ, শিশুরা ও চরাঞ্চলের মানুষজন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন গত বন্যায় ঘর-বাড়ি হারানো ও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষেরা। রেহাই পাচ্ছে না গবাদি পশুরাও। অনেকেই খর-কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁছগাছী ইউনিয়নের সুরবালা জানান, গত বন্যায় বাড়ির সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এখন শীত আসছে কিন্তু গরম কাপড় কেনার সমর্থ নাই। এ অবস্থায় নিদারুন কষ্টে দিন পার করতেছি।
শীত কাতর মানুষেরা জানান, গরম কাপড় কেনা সমর্থ না থাকায় শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগ-ব্যাধি নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন তারা। কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে বের হলেও কাজ জোটাতে পারছেন না দিনমজুর শ্রেণির মানুষ।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানান, সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ৫৭ হাজার কম্বলের মধ্যে ৫০ হাজার ইতিমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরো বলেন, এ ক্ষেত্রে জেলার অভাবী, দুস্থদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।
সূত্রঃ allbanglanews.net