আব্দুল মালেকঃ
উলিপুরে ছোট বড় সকলের অতি পরিচিত প্রভাত চন্দ্র দাস বুদা, তাকে প্রভাত চন্দ্র দাস হিসাবে কেহ না চিনলেও বুদা-দা নামে এক বাক্যে সকলেই চেনে। বুদা-দা স্থানীয় উলিপুর মহারানী স্বর্নময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে দপ্তরী পদে সূনামের সহিত চাকুরী করে অবসরে চলে যান। এরপর থেকে তার জীবনে নেমে আসে দুঃসহ এক করুন কাহিনী। স্ত্রী, বিধবা পুত্রবধু ও একমাত্র নাতনীকে নিয়ে তার সংসার হলেও উপার্জনের কেহ না থাকায় অর্ধাহারে-অনাহরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন
ঐতিহ্যবাহী উলিপুর মহারানী স্বর্নময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘ ২৯ বছর দপ্তরী পদে চাকুরী করে অবসরে যান তিনি। অবসরের পর সরকারী ভাবে এককালীন সামান্য কিছু অর্থ পান। তার অন্য কোন সহায় সম্পদ না থাকায় সেই অর্থ দিয়ে কোন রকমে ২ কন্যার বিয়ে দেন। উলিপুর পৌর শহরের জোদ্দার পাড়ায় বসবাসরত অসহায় প্রভাত চন্দ্র দাস বুদা চাকুরী শেষে অবসরে তার একটু সুখ শান্তিতে জীবন যাপনের কথা থাকলেও সেটিও তার ভাগ্যে জোটেনি। ১৯৮৭ সালে অবসর গ্রহনের পর দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বৃদ্ধ বয়সে উপার্জনা ক্ষমতা না থাকায় অতিকষ্টে পরিবার পরিজন নিয়ে দিনাতিপাত করছেন। তার ৫ মেয়ের বিয়ের সময় সমাজের বিত্তবানদের আর্থিক সাহায্য সহযোগীতা নিয়ে কোন রকমে বিয়ে দেন। সে সময় উপার্জনকারী একমাত্র ছেলে প্রদীপ চন্দ্র সরকার ২০১০ সালে কিডনী বিকল হয়ে অকালে প্রাণ হারান।
বর্তমানে স্ত্রী, বিধবা পূত্রবধু ও তার ১ কন্যাসহ পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৪ জন। এ অবস্থায় তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন । সরকারী বিধি মোতাবেক ৬৫ বছর বয়স হলে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে স্বামী ও স্ত্রীর বয়স্ক ভাতা পাওয়ার কথা। বর্তমানে বুদা-দার বয়স ৯০ বছর ও তার স্ত্রীর বয়স ৭৫ বছর চলছে। বারবার উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে ধরনা দিয়েও তাদের ভাগ্যে বয়স্ক ভাতার একখানা কার্ডও মেলেনি। এ ব্যপারে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি আমার সঙ্গে অফিসে যোগাযোগ করলে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেব। অপরদিকে, তার একমাত্র বিধবা পূত্রবধু মমতা সরকার বিধবা ভাতা পাওয়ার কথা থাকলেও তিনিও তা পাচ্ছেন না।
প্রভাত চন্দ্র দাস বুদা’র পরিবারের করুন এ পরিনতির কথা জানতে পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বয়স্ক ও বিধবা ভাতা দেয়ার ব্যপারে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে অসহায় এই পরিবারটির অভিযোগ সরকারি ভাবে তিনি কোন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা পাননি বলে অশ্রুস্বজল নয়নে এ প্রতিনিধিকে জানান। সেই সাথে তিনি তার শুভাকাঙ্খীদের প্রতিও সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।