বিরামহীন যাত্রা
শাহাজাদা বসুনিয়া
আমি হাঁটি মানুষের ভিড়ে, ভিড়ের ভেতর ব্যস্ত রাজপথে
হাঁটি, পথ চলি সংকটে, এগুনোর পথ রুদ্ধ
মানুষ হাঁটে দুর্গম পথে, সরু অতি সংকীর্ণ পথে-
বিড়ম্বনায় পিষ্ঠ হয় বিবেকের পথ, বিভোরতায়
থমকে দাঁড়াই পথে যেন বাকরুদ্ধ বোবা পথচারী এক।
আমি হাঁটি পাখিদের ভিড়ে, ভিড়ের ভেতর নিশানচিহ্নবিহীন পথে
উড়ি আর উড়ি, ছুঁই নীলআকাশ, আমার নেশা হলো উড়ে চলা মহাকাশে।
ডানা মেলে উড়ি ঊর্ধ্বে-যেখানে বায়ু বাতাসের পথ অবিরত
শূন্যে ঠাঁই নেই, উড়ে চলি ঠিকানাবিহীন পথে, দূরাকাশে
বায়ু প্রবাহে পড়ে থাকে বিস্তৃত সমাধিভূমি।
আমি হাঁটি প্রাণিকূলের ভেতর, ভিড়ের ভেতর
দৌঁড় মারি, তাড়া খাই, আবার দৌড় দেই পথে নিরাপদে
বৈরি আবহাওয়ায় ঘুম পারি, নির্ঘুম রাত আমার
মুনিবের ইচ্ছায় বেড়ে ওঠে দেহ, কসাইয়ের ছুরির কিনারায়
মৃত্যুর ছায়াযুদ্ধে শুধু বিষাদে দেখি রক্ত কল্লোল।
আমি হাঁটি জড়ো বস্তুর ভেতর, প্রাণহীন বস্তুর আশ্রয়শিবিরে
ঘুমহীন চোখে শুয়ে থাকি বিস্তর, বোবা-কথা নেই আমার
অনন্ত নিদ্রার মতন, অনুভূতিহীন নিশ্চুপ বিবেকের হামাগুড়ি
যেখানে রাত, সেখানেই পড়ে থাকা নিসাড় দেহ আমার
অনুভূতিহীন জীবনের মূল্য খুঁজি মহাকালের অনন্ত পথচলায়।
পুনরায় আমি হাঁটি মানুষের ভেতর, আমার ভেতরটা
আতকে ওঠে, প্রাণির ঊর্ধ্বে মানুষ, মানুষ মারামারি করে
খুনাখুনি চলে অহরহ, ট্রাম-ট্রাম যুদ্ধ চলে, বন্দীশিবিরে
হানাহানি চলে জাত-বিজাতে, ধর্মে-কর্মে, কাজ-কর্মে
তবুও আমাদের বিবেক বিবেকের ভেতর হাঁটাহাঁটি করে মানব কল্যাণে।
আমরা মানুষ
মানুষ মানুষের জন্য
শান্ত হোক বিবেক, শান্ত হোক ধরিত্রী।