বট তলের বুড়ি মা
এখনো ফিরে যায়নি ঘরে
চুপচাপ বসে থাকে সদা
মহাকালের সাক্ষী বটতলে।
বর্ষার বৃষ্টিতে জবজবে ভিজে,
প্রচন্ড শীতে থরথরে কাঁপে
উজ্জ্বল মুখ তার মলিন হয়েছে
কাট পোড়া রোদে শুকে।
বট তলের বুড়ি মা
কাহারো সঙ্গে বলেনা কথা
বুকে চাঁপা অাছে তার
জমানো শত দুঃখ ব্যথা।
কেউ যদি কিছু দেয় খেতে
ঝট করে এসে কাক,পট করে নেয় তুলে।
বিড়াল-কুকুর কখনও নিরবে খেয়ে যায়
বুড়িমা কখনও কাউকে না তাড়ায়।
বট তলের বুড়ি মা
গভীর রাতে সুর ধরে কাঁদে,
“কইরে খোকা ঐ যে গেলি
আসলি না আর ফিরে
মাকে ছাড়া থাকতে তোর
খুবই ভালো লাগে।
রাগ করিস না ময়না-সোনা
আয়না ফিরে আয়
তোকে ছাড়া ঘরে ফিরতে
মনটা নাহি চায়।
তোর জন্য থাকি বসে
বট তলের নিচে
তাড়াতাড়ি আয়না বাপ
ঘরে ফিরবো তবে।”
বট তলের বুড়ি মা
খোকা তোমার শুধুই খোকা
বড় হয়না কখনও
সে ছিল সময়ের বীর
একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা, জান?
সে আর কখনও আসবেনা ফিরে
জীবন দিয়েছে দেশের তরে।
বট তলের বুড়ি মা
বলে নাকো কিছু নিরব চাহনি
কেউ কি বুঝে মায়ের ব্যথাখানি?
মা পারেনা হারাতে মনে
খোকা তাকে দিয়েছিল চিঠি ক্ষণে।
যাচ্ছি মা, সামনের শুক্রবারে
অপেক্ষা কর সকালে বটতলে।
বট তলের বুড়ি মা
ঐযে সকালে এসেছিল
আর ফিরলনা নীড়ে
ভেবে, বাবা হারা ছেলে কখন ফিরে।
তাজা যৌবন মায়ের এখানে
বিধাতার নিয়মে বৃদ্ধ অাভা পেল
তবুও মা খোকাকে ছাড়া
একলা ঘরে নাহি ফিরল।
বট তলের বুড়ি মা
জানি আর ফিরবেনা ঘরে
মরন হলেও বুঝি রবে এখানে পরে।
ফিরে দিতে মায়ের খোকাকে
কেউ পারবে না কভূ
মা আমরন থাকে যদি বটতলে
খোকার আশায় তবু।
_____________________
জরীফ উদ্দীন