রাজা মিয়াঃ
খাদ্য মন্ত্রনালয় চলতি মৌসুমে ১৫০০০ চালকল মালিককে কালো তালিকাভুক্ত করেছেন। যার অাওতায় উত্তরবঙ্গের অনেক ছোট ছোট চালকল অাছে যেগুলোর অস্তিত্ব অাজ বিলুপ্তির পথে। তাই উত্তরবঙ্গের চালকল মালিকদের পক্ষ থেকে অামরা এ সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করছি। কারন এ সিদ্ধান্তের অন্তরালে একদিকে রয়েছে একটি সিন্ডিকেটকে লাভবান করার অপচেষ্টা, অপরদিকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এসব চাতাল শিল্পকে ধ্বংসের চক্রান্ত। একজন রিক্সাওয়ালা যেমন তার যাত্রীকে গন্তব্যে পৌছে দিয়ে ভাড়া পায়, একজন দিনমজুর কাজ শেষে তার মজুরি পায়, ঠিক তেমনই একজন চাতাল মালিক সরকার নির্ধারিত ধানের দামের সঙ্গে ধানসিদ্ধ ও শুকনো করনের লেবার খরচ, ধানের ক্রাশিং বিদ্যুত বিল, বস্তা প্যাকিং এবং তার নিজের মজুরি বাবদ মন প্রতি মাত্র ৫০ টাকা যোগ করে সরকার নির্ধারিত প্রতিমন ধান থেকে প্রাপ্ত চাউলের অনুপাত অনুযায়ী সংগৃহীত চাউলের দাম নির্ধারনের অনুরোধ করে অাসছে। এটা কি তার অপরাধ? ধান থেকে চাউল তৈরির সমস্ত খরচসহ মন প্রতি ৫০ টাকা মজুরি চাওয়া কি অপরাধ হতে পারে? অার এই অপরাধে যখন ১৫ হাজার চালকলকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয় তখন বড় বিস্ময় জাগে। অথচ গুটিকয়েকজনের অটোমিল সিন্ডিকেট উৎপাদিত চাল বাজারজাত করে তাদের ইচ্ছেমত প্রতি কেজি চালে যখন ভোক্তাদের কাছে ৮/১০ টাকা লাভ খসিয়ে নিচ্ছে, সেখানে খাদ্য মন্ত্রনালয়ের কোন মনিটরিং নেই। নেই কোন শাস্তিমুলক ব্যবস্হাও। কোন মাথা ব্যথাও নেই।
তাই বিভিন্ন প্রিণ্ট মিডিয়া, বিভিন্ন টিভি ব্যক্তিত্ব বিশেষ করে শাইখ সিরাজ ভাই (কৃষি সম্পর্কে যার অভাবনীয় জ্ঞান), জ.ই. মামুন ভাই, বোন মুন্নি সাহাকে অামন্ত্রন জানাচ্ছি দেখে যান অামার কুড়িগ্রাম জেলার ৭০০ চালকল কিভাবে উৎপাদন বিমুখ হয়ে পড়ে অাছে। অপরদিকে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে যে দেশ খাদ্য রপ্তানি করে, সেই দেশকে মাত্র ৬ মাসের মাথায় কোন শ্রেণীর অসততা ও অদুরদর্শিতার কারনে অামদানি করতে হয় সেটিও ভাববার বিষয়। কোন শ্রেণীর কারনে প্রধানমন্ত্রীর ১০ টাকা কেজি চাল প্রদানের প্রকল্প বন্ধ হয়, গুটিকয়েক মিলের কাছে গোটা দেশের চালের বাজার জিম্মি হয়ে অাছে এবং কি কারনে এতগুলো চালকলকে কালো তালিকাভুক্ত করে ধ্বংশ করার চক্রান্ত করা হচ্ছে। এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে পত্রিকায় এবং টিভিতে প্রচারের মাধ্যমে খাদ্য মন্ত্রনালয়ের এসব ব্যর্থতার সঠিক চিত্র তুলে ধরার অনুরোধ করছি। সেই সংগে অামাদের মত তৃনমুল মূর্খ মিলারদের অাপনাদের টকশোগুলোতে ঘৃনা না করে অালোচনার সুযোগ দিয়ে খাদ্য বিভাগের সঠিক চিত্র প্রকাশের ব্যবস্হা করার জন্য অনুরোধ করছি।
লেখকঃ চালকল মালিক, উলিপুর, কুড়িগ্রাম।