এ.এস. জুয়েলঃ
উলিপুর বাজারকে কেন্দ্র করে এই উপজেলার মানুষের অর্থ-সামাজিক কর্মকান্ড অনেকটাই পরিচালিত হয়। তাই সমগ্র উপজেলার মানুষকে উলিপুরের দিকে ছুটে আসতে হয় প্রতিদিন। বর্তমানে উলিপুর উপজেলায় প্রায় ৮ লক্ষ মানুষের বসবাস। তাদের নেই স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহার করার সুযোগ। তারা যত্র-তত্র মলত্যাগ করে থাকে যা স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরুপ। চাকুরি, ব্যবসা, শিক্ষা, চিকিৎসা, মামলা-মোকাদ্দমা, বিনোদন নানাবিধ প্রয়োজনে উলিপুরে ছুটে আসতে হয় প্রতিদিন প্রায় ১ লক্ষ মানুষকে। এই বিপুল জনসংখ্যার জন্য পাবলিক টয়লেট না থাকায় বাধ্য হয়ে যত্র-তত্র মলত্যাগ করছে অথবা দীর্ঘসময় প্রস্রাব, পায়খানা আটকে রেখে বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
আমাদের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। নারীদেরকে চাকুরি, শিক্ষা, চিকিৎসা, কেনা-কাটার জন্য মার্কেটে অবস্থান করতে হয়। কিন্তু তাদের জন্য নেই টয়লেট ব্যাবহারের সুযোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখলে কিডনিজনিত রোগ, মূত্রথলিতে ব্যথা ও কষ্ট অনুভব হতে পারে এবং ঘন ঘন প্রদাহ (ইনফেকশন) ও এলারফিশন হতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষের তুলনায় মহিলাদের মূত্রনালী বা ছলিতে প্রদাহ ও এনা্রফিশন এর প্রকোপ পুরুষের তুলনায় বেশি। এতে কর্মক্ষম মানুষের একদিকে উৎপাদনশীলতা কমে যায় অন্যদিকে অসুখের জন্য অর্থ ব্যয় করতে হয়।
প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া না দিয়ে কারো পক্ষেই থাকা সম্ভব না। তাই যথাসময়ে যথাস্থানে মল-মূত্র ত্যাগ করা স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ দুটি বিষয় বিবেচনা করে সরকারী অফিসে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, ইউনিয়ন পরিষদে, মার্কেটে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট সুবিধা নিশ্চিতকরণে সরকারকে উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে।
লেখকঃ সহ-সমন্বয়ক, রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি, কুড়িগ্রাম।