আব্দুল মালেকঃ
উলিপুরে অসময়ে তিস্তা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে ২টি গ্রাম নিশ্চিন্ন হয়ে গেছে। ২টি স্কুল ও ৬৫টি পরিবারের বসতভিটাসহ ১’শ হেক্টর আবাদী জমির আধা পাকা ফসল নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। নদী ভাঙ্গনে বাস্তভিটা হারিয়ে দিশেহারা এসব পরিবার খোলা আকাশের নীচে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছেন। বাস্তভিটা হারা মানুষজনের অভিযোগ এখন পর্যন্ত কেউ তাদের খোঁজ খবর নেয়নি।
থেতরাই ইউনিয়নে তিস্তা নদী ভাঙ্গন কবলিত হোকডাঙ্গা মাঝিপাড়া গ্রামে সরোজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নদীর ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে মানুষজন তাদের ঘরবাড়ী সরিয়ে নিতে ব্যাস্ত। দিশেহারা মানুষজন জানায় প্রতিদিন ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ৮-৯ টি করে বাড়ীঘর নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভাঙ্গনে জোয়ান সতরা সরকারী প্রাথমি বিদ্যালয় ও দক্ষিন চর হোকডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ হোকডাঙ্গা মাঝিপাড়া ও ডাক্তার পাড়া গ্রাম নিশ্চিন্ন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনে ৬৫টি পরিবারের ঘরবাড়ী নদীগর্ভে বিলিন হয়ে সর্বশান্ত হয়েছে। ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে ওই এলাকার সংরক্ষিত ইউপি সদস্য তারামনির বাড়ীসহ ভারতপাড়া, দালাল পাড়া ও হোকডাঙ্গা পাঠোয়ারী পাড়া গ্রামের ৮০টি পরিবারের ঘরবাড়ী ক্ষেত খামার ও ধানি ফসলের জমি। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষের অভিযোগ গত এক সপ্তাহ ধরে এ গ্রামে নদীর ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। আমারা সব কিছু হারিয়ে দিশেহারা। কিন্ত ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের কেউ তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। ফলে তারা খোলা আকাশের নীচে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
নদী ভাঙ্গনে সর্বশান্ত হয়েছেন ওই গ্রামের ভক্ত চন্দ্র বর্ম্মন(৪২), মহুবুবার রহমান(৬০) ও সচিন্দ্র চন্দ্র বর্ম্মন(৫৫) জানান গত ২৫ অক্টোবর রাতে ভাঙ্গনের মুখে তাদের ১টি করে ঘর সরাতে পেরেছেন বাকী ঘর ভেসে গেছে। এখন সড়কের উপর ঝুপড়ি করে পরিবার নিয়ে মানবেতন জীবন যাপন করছেন। বিধবা সুচিত্রা রানীর ১টি ঘর সে ঘরের শুধু বেড়া রক্ষা করতে পেরেছেন, কিন্ত ভেসে গেছে ঘরের চাল। এখন অন্যের বাড়ীতে আশ্রীত।
এদিকে উপজেলার তিস্তা নদীর কবলে বজরা, দলদলিয়া, গুনাইগাছ ও ব্রহ্মপুত্র নদের হাতিয়া, সাহেবের আলগা, বেগমগঞ্জ, বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের ভাঙ্গনের খবর পাওয়া গেছে। থেতরাই ইউনিয়নের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য তারামনি জানায়, তার নিজের বাড়ী ভাঙ্গনের হুমকিতে পড়েছে। বিষয়টি চেয়ারম্যান ও ইউ এন ওকে জানিয়েছি। থেতরাই ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী জানান ওই এলাকায় ভাঙ্গন চলছে। তিনি তাৎক্ষনিক ভাবে বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম গতকাল সোমবার নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন হোকডাঙ্গা গ্রামের ভাঙ্গন বিষয়ে তিনি অবগত আছেন। আগামী বর্ষার আগেই ওই এলাকায় ভাঙ্গনরোধে কাজ হবে বলে জানান।