নিউজ ডেস্কঃ
চলতি বছরের ডিসেম্বরেই চালু হচ্ছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার কুলাঘাটের ধরলা নদীর ওপর নির্মাণাধীন দ্বিতীয় ধরলা সেতু। ইতোমধ্যে সেতুটির শেষ স্প্যান বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) অধীনে বাস্তবায়নাধীন ৯৫০ মিটার পিসি গার্ডারের এই সেতুর ৯৫ ভাগের বেশি কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ শেষ করে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। কুড়িগ্রাম এলজিইডি সূত্রে এসব তথ্য জানিয়েছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, এলজিইডির অধীনে দ্বিতীয় ধরলা সেতুটি নির্মাণকাজ বাস্তবায়নে সিমপ্লেক্স ও নাভানা কনস্ট্রাকশন গ্রুপের সঙ্গে যৌথ চুক্তি সম্পাদিত হয় ২০১৪ সালে। চলতি বছরের ১৪ অক্টোবর শেষ স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়। এখন মূল সেতুর রেলিং স্থাপনের কাজ শেষ হলেই এ বছরের যে কোনও দিন সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
কুড়িগ্রাম এলজিইডি সূত্র জানায়, নদী শাসন, অ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণ ও মূল সেতুর জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ১৯১ কোটি ৬৩ লাখ ২২৩ টাকা ৫৮ পয়সা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত জনগুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প ছিল এই সেতু। প্রকল্পটির উদ্বোধন হলে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার জনগণ, বিশেষ করে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার মানুষ বেশি উপকৃত হবেন। বিভাগীয় শহর রংপুরসহ দেশের সঙ্গে দেশের উত্তর-পশ্চিমের এ অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ অনেক সহজ হবে।
সূত্র আরও জানায়, দ্বিতীয় ধরলা সেতুটি পণ্য পরিবহনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সেতুটি দিয়ে যান চলাচল শুরু করলে ভুরুঙ্গামারীর বঙ্গসোনাহাট স্থলবন্দরের মালামাল পরিবহন অনেক সহজ হবে। কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার কৃষিজাত পণ্য পরিবহনে জটিলতাও কমবে। এছাড়া বঙ্গসোনাহাট স্থলবন্দর হয়ে ফুলবাড়ীর দ্বিতীয় ধরলা সেতু দিয়ে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সেভেন সিস্টারস (আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম, মনিপুর, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা ও অরুণাচল) রাজ্যগুলোর সঙ্গে পণ্য পরিবহনের ব্যয়ও কমবে বহুলাংশে। এসব রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংরাবান্ধা হয়ে কলকাতার যোগাযোগও অনেক সহজ হবে।
ফুলবাড়ী উপজেলার মিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, ফুলবাড়ী সদরের আবেদ আলীসহ স্থানীয়রা জানান, বর্তমান সরকারের গৃহিত এ প্রকল্প ধরলা পারের এ উপজেলাসহ উত্তর ধরলার মানুষের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। সেতুটি যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে, যা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে এগিয়ে নেবে।
ফুলবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ সেতু প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অনুগ্রহের ফসল। তিনি বিশেষ নজর না দিলে মাত্র তিন বছরে এত বড় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সম্ভব হতো না। তাকে (প্রধানমন্ত্রী) দিয়েই এই সেতুর উদ্বোধন করবো আমরা। এ এলাকার জনগণ প্রধানমন্ত্রীর জন্য অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বহুল প্রতীক্ষিত সেতুটি প্রধানমন্ত্রীর ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নেও ভূমিকা রাখবে।’
এলজিইডি কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ আব্দুল আজিজ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সেতুটির ৯৫ ভাগেরও বেশি অংশের কাজ শেষ হয়েছে। এখন সংযোগ সড়ক কার্পেটিংসহ ছোটখাটো কিছু কাজ বাকি রয়েছে, যা চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার চেষ্টা চলছে। আমরা আশা করছি, এ বছরের ডিসেম্বরের যে কোনও দিন যান চলাচলের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেতুটির উদ্বোধন করবেন। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’
সুত্রঃ banglatribune