তালাত মাহামুদ রুহানঃ
উলিপুরসহ গোটা উত্তরজনপদ আবারো ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে। বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং ও বিভ্রাটের কবল থেকে কোনো অবস্থাতেই মুক্তি মিলছে না উলিপুরে উপজেলায় বসবাসরত মানুষের। দিন রাত ২৪ ঘন্টার মধ্যে একটানা পুরোপুরি ২-৪ ঘন্টাও বিদ্যুৎ এর দেখা মিলছে না। ঘন্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন উত্তর জনপদের মানুষদের কালো আধারেই থাকতে হচ্ছে। দিন কি রাত্রি, সর্বদা চলছে বিদ্যুতের আসা-যাওয়া। গত কয়েক দিন থেকে চলছে তালপাকা গরম। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেই পাল্লা দিয়ে চলছে অসহনীয় লোডশেডিং ও বিদ্যুতের যন্ত্রনাদায়ক বিভ্রাট। এতে করে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।
এ বিষয় পাচঁপীর ডিগ্রী কলেজের এক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বললে উলিপুর ডট কম কে জানায়, সামনে অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা, এছাড়াও বিভিন্ন সময় কোনো না কোনো স্কুল বা কলেজের ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বার্ষিক বা অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ফলে কোনো না কোনো শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সময়েই পড়াশুনার চাপে থাকতে হয়। প্রত্যেক বাড়িতে বিদ্যুৎ থাকায় তারা সবাই বিদ্যুৎ নির্ভরশীল, আর তাই আধাঁর থেকে আলোকিত করার একমাত্র উপায় বিদ্যুৎ। কিন্তু কিছুদিন ধরে বিরামহীন লোডশেডিং এর কবলে পড়েছে তারা। পড়াশুনার করার সময়গুলোতে প্রয়োজন মাফিক বিদ্যুৎ না পাওয়ায় প্রত্যেক শিক্ষার্থী ঠিকমত লেখা পড়া করতে পাচ্ছে না। তারা ক্রমেই লেখাপড়া থেকে পিছিয়ে পড়ছে। তিনি আরও বলেন, লোড শেডিং কমানের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বিরাট একটি অংশ ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
এছাড়াও বিদ্যুতের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য, সরকারী ও আধা সরকারি প্রতিষ্ঠান। ব্যাহত হচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম।
লোডশেডিং নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, আগে তারা যেকোনো বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কবলে পড়লেই ভুক্তভোগীরা আগে সরাসরি যোগাযোগ করে কিংবা দূরালাপনি যন্ত্রের সাহায্য নিয়ে প্রার্থনা কিংবা বিভিন্ন খোঁজ খবরাদি নিতে পারলেও এখন জরুরি বিদ্যুতের সরবরাহ কেন্দ্রের কারো কাছে এ বিষয়ে সাহায্য কিংবা সহযোগিতা চাইতে গেলে ভৎসনার শিকার কিংবা লাঞ্চিত হতে হচ্ছে। এমন অভিযোগ বিভিন্ন ভুক্তভোগী গ্রাহকদের।
অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিভাগের নিলর্জ্জ কতিপয় দায়িত্বশীলরা বলছেন, এলাকায় খুব একটা লোডশেডিং নেই। গত রমজান মাসে এমনকি কোরবানি ঈদের পরেও লোডশেডিং এর কবল থেকে কোন উপায়ে মুক্তি মেলেনি বিদ্যুতের সংযোগ নেওয়া মানুষজনের।
বর্তমান পেক্ষাপটে গত কয়েক দিনের বিদ্যুতের লোডশেডিং নিয়ে উর্ধ্বতনদের কাছে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হলে তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাত দাড় করিয়ে গনমাধ্যমকে এড়িয়ে যেতে চাইছিলেন। কেউ কেউ আবার যান্ত্রিক ক্রুটির অজুহাত দিয়ে তাদের দায় এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করছেন। একজন কর্মকর্তা প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও পরে নাম প্রকাশ না করার শর্তে লোডশেডিং এর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, হ্যাঁ লোডশেডিং আছে। সঙ্গে এও বলেছেন এটা ক্ষণস্থায়ী সমস্যা, পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে শীঘ্রই। তবে তিনি এটিও বলেছেন যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থানসমুহের বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখতে বিভিন্ন স্থান থেকে লোডশেডিং করে সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে।