আব্দুল মালেকঃ
চাঞ্চল্যকর আর্জিনা অপহরণ মামলা দায়েরের এক সপ্তাহ পার হলেও অভিযক্ত আসামীদের গেফতার করতে পারেনি থানা পুলিশ। অপহৃতা শিশু কুড়িগ্রাম আমলী আদালতে অপহরণকারী পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী নাজমা বেগমের নামসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে অপহরনের চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। আসামী গেফতার না হওয়ায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। এদিকে অপহরণের সাথে জড়িতরা প্রভাবশালী হওয়ায় দরিদ্র আর্জিনার পরিবারকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকিসহ নানা ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে বলে পরিবারটির লোকজন জানিয়েছে। অভিযুক্তের স্বামী পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার প্রচার চালানোয় পরিবারটি এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে।
জানা গেছে, উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের রুপার খামার গ্রামের নানার বাড়ী থেকে শিশু আর্জিনাকে আয়শা ও তার ভাই সাহেব আলী গত ৬ আগষ্ট অপহরণ করে তাদেরই ভাই এস.আই আবু বক্কর সিদ্দিকের রংপুরের মুন্সিপাড়াস্থ ‘ক্ষণিকালয়’ ভাড়া বাসার তৃতীয় তলায় আটকে রাখে। গত ২০ আগষ্ট গোপন সুত্রে খবর পেয়ে ওই ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম ফুলু তার ৫জন সঙ্গীকে নিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে আসলেও তাকে থানায় না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দেন। চেয়ারম্যান উদ্ধারের পরদিন ইউনিয়ন পরিষদে শিশু আর্জিনাকে নিয়ে আসলে এলাকাবাসি জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে উদ্ধার হওয়ার কাহিনী গোপন রেখে তার মামা মোন্নাফের হাতে তুলে দেয়। উপস্থিত জনতা অপহরণ ও উদ্ধারের কাহনী জানতে চাইলে চেয়ারম্যান একটা গল্পের বয়ান দিয়ে রহস্যজনক নিরবতা পালন করেন। আর্জিনা তার বাবা-মাসহ এলাকার লোকজনকে অপহরণের প্রকৃত ঘটনা জানালে এলাকাবাসি আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চেয়ারম্যানকে চাপ দিতে থাকেন।
অভিযোগ উঠেছে, চেয়ারম্যান মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে অপহরণকারীদের বাঁচাতে দরিদ্র পরিবারটি যাতে আইনি প্রক্রিয়া যেতে না পারে সেজন্য কালক্ষেপন করতে থাকেন। এপরিস্থিতিতে আর্জিনার বাবা আক্কাছ আলী বাদি হয়ে অপহরণের ১৭ দিন পর গত ২২ আগষ্ট গোবিন্দগঞ্জ থানায় কর্মরত এস.আই আবু বক্কর সিদ্দিকের স্ত্রী নাজমা বেগম, তার বোন আয়শা ও সাহেব আলীকে আসামী করে উলিপুর থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের (সংশোধনী/০৩)এর৭/৩০ ধারায় মামলা দায়ের করেন। কুড়িগ্রাম জজ আদালতের একজন বিজ্ঞ আইনজীবি জানান, গত ২৩ আগষ্ট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মিজানুর রহমানের আদালতে অপহৃতা আর্জিনা অপহরণকারী ৩ জনের নাম উল্লেখ করে জবানবন্দি দিয়েছে। এস.আইয়ের বাড়ি ওই ইউনিয়নের কেকতির পাড় গ্রামে। এদিকে মামলা দায়েরের পর গত সোমবার মামলার বাদি জানান, আসামীরা গেফতার না হওয়ায় তাদের লোকজন উল্টো আমাদেরকেই মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি করবে বলে হুমকি দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এস আই আতাউর রহমান জানান, আসামী গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। থানার অফিসার ইনচার্জ এসকে আব্দুল আল সাইদ জানান আসামী গ্রেফতারে জোর পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।