আব্দুল মালেকঃ
বন্যা পরিস্থিতির মারাত্বক অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদ সীমার ৭৭ সেঃ মিটার উপর এবং ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি সামান্য কমলেও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে নদীর অববাহিকার সাহেবের আলগা, বেগমগঞ্জ, বুড়াবুড়ি, হাতিয়া, দলদলিয়া, থেতরাই, গুনাইগাছ ও বজরাসহ ৮টি ইউনিয়নের শতাধিক চর ও দুই শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, বন্যা কবলিত এলাকায় ২৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এদিকে উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের ফকির মোহাম্মদ চরের কৃষক বানভাসা (৬৫) ও হাতিয়া ইউনিয়নের উচা ভিটা গ্রামের মিষ্টার আলীর পূত্র নাজমুল হক (৪) বন্যার পানিতে ভেসে নিখোঁজ হয়েছেন।
বন্যায় উপজেলার কয়েক হাজার ঘরবাড়ী, রাস্তাঘাট, ১০ হাজার হেক্টর রোপা আমন, বীজ তলা পানিতে ডুবে গেছে ও ১৬৫ টি পুকুরের প্রায় ৩৫ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। চলতি বছরে মাটিভরাটকৃত ৬টি আশ্রায়ন কেন্দ্র ৩/৪ ফুট পানির নীচে থাকায় চরের মানুষ সেখানে আশ্রয় নিতে পারছেন না। চর এলাকার শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
বন্যার পানির তোড়ে বজরা হাঁসখাওয়ার ব্রীজ ও রাস্তা ভেঙ্গে কাশিম বাজারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে নতুন করে পূর্ববজরা, খামার বজরা ও কালপানিবজরা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। থেতরাই ও দলদলিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানি বন্দি মানুষগুলো নিরাপদ আশ্রয়, বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকটে পড়েছে।
আজ সোমবার উপজেলার দলদলিয়া, থেতরাই, বজরা, ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে পানিবন্দি মানুষজন গবাদিপশু ও প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র নিয়ে বাঁধের রাস্তাসহ উচু জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছে। বানভাসি মানুষ তাদের গবাদি পশু নিয়ে চরম দুভোর্গে পড়েছে।
দলদলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান মুন্সি বলেন, এবারের বন্যা ৮৮ সালের বন্যাকেও হার মানিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দূর্গত এলাকায় এ পর্যন্ত ৫২ মেঃ টন চাল ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।